ব্রিটিশ আমল থেকেই পূর্ব বাংলার সকল ছাত্র ও রাজনৈতিক আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এসব আন্দোলনের নেতৃত্বের ভূমিকায় বরাবরই অগ্রগামী ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নেতারা। তবে, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে দেশ পরাধীন থাকলেও নিয়মিত ছিল ডাকসু নির্বাচন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ নির্বাচন অনিয়মিত হতে শুরু করে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন নিয়মিত হলেও অনিয়মিত শুধু শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব গড়ার কারিগর হিসেবে পরিচিত ডাকসু নির্বাচন। ছাত্রলীগসহ ক্যাম্পাসে সক্রিয় সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন নির্বাচনের পক্ষে মত দিলেও সুষ্ঠু পরিবেশের অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ডাকসুর ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯২৩-২৪ সালে ডাকসু প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৩৭ বার। স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ডাকসু নির্বাচন হয় ২৯ বার। তবে, স্বাধীনতার পর নির্বাচন হয়েছে মাত্র আটবার।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সেনা ও স্বৈরশাসন শেষে দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০১৯ সালে কাঙ্ক্ষিত ডাকসু নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদের মনে জোয়ার তৈরি হয়। এরপর নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন হবে বলে ধারণা করেছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে, আশায় জল ঢেলে কমিটি বিলুপ্তির দীর্ঘ চার বছর পরও নির্বাচনের নাম মুখে তুলছেন না সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পার হলেও ডাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৩৭ বার। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ডাকসু নির্বাচন হয় ২৯ বার। তবে, স্বাধীনতার পর নির্বাচন হয়েছে মাত্র আটবার / ছবি- সংগৃহীত

জানা যায়, ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে ডাকসুর কথা বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন হবে। তবে, গঠনতন্ত্রকে থোড়াই কেয়ার করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সাধারণত ডাকসু নির্বাচনে জয়ী প্যানেলের পাঁচজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হন। সিনেটে শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও বিভিন্ন চাওয়া তুলে ধরেন তারা। বর্তমানে ১০৪ সিনেট সদস্যের মধ্যে শিক্ষক, জনপ্রতিনিধিসহ অন্য সবাই থাকলেও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ছাড়াই চলছে সিনেটের সার্বিক কার্যক্রম।

প্রতিনিধি আছে সবার, নেই শুধু শিক্ষার্থীদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের বার্ষিক নির্বাচন ২৮ মে। এ নির্বাচন ঘিরে কর্মচারীদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছে পোস্টার-ব্যানার। দুটি প্যানেলের প্রার্থীরা তাদের অনুসারীদের নিয়ে নিয়মিত গণসংযোগ করছেন। ক্যাম্পাসে ছোটখাটো মিছিলও দেখা যাচ্ছে কর্মচারীদের। পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচনে জয়ী করতে সক্রিয় কর্মচারীরা।

এর আগে ১ ডিসেম্বর সম্পন্ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি। দায়িত্ব নিয়েছেন শিক্ষক সমিতির নতুন নেতৃত্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনও ৩০ নভেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে পেয়েছে তাদের নতুন কমিটি। সিনেট সিন্ডিকেট নির্বাচনও সময় শেষ হওয়ার সাথে-সাথে অনুষ্ঠিত হয়। ব্যতিক্রম শুধু ডাকসু। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনের চার বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি ডাকসু-সংশ্লিষ্টদের।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ডাকসু নির্বাচন অনিয়মিত হতে শুরু করে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন নিয়মিত হলেও অনিয়মিত শুধু শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব গড়ার কারিগর হিসেবে পরিচিত ডাকসু নির্বাচন। ছাত্রলীগসহ ক্যাম্পাসে সক্রিয় সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন নির্বাচনের পক্ষে মত দিলেও সুষ্ঠু পরিবেশের অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী হেলালুর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের মতো মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ যে শিক্ষার্থীরা, তাদের শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ করে যে ডাকসু, সেই ডাকসু নির্বাচন হওয়ার আশু কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হয়, কর্মচারী সমিতির নির্বাচন হয়, হয় না শুধু ডাকসু নির্বাচন।

ডাকসু না থাকলেও ফি দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

এদিকে, দীর্ঘ চার বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন না হলেও বন্ধ হয়নি হল ইউনিয়ন ফি ও বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিয়ন ফি হিসেবে ভাতা নেওয়া। প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের সকল ফি-র পাশাপাশি হল ও বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিয়ন ফি হিসেবে ১২০ টাকা করে দিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ৪২ হাজারের অধিক। সে হিসাবে গত চার বছরে ইউনিয়ন ফি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় প্রায় দুই কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আখতার হোসেন বলেন, প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ডাকসু ফি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আয় করে। তবে, ডাকসু উপলক্ষ্যে টাকা নিয়েও নির্বাচন না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের আইনগত অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের বার্ষিক নির্বাচন ঘিরে কর্মচারীদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও হয় না ডাকসু নির্বাচন / ছবি- সংগৃহীত

নিয়মিত ডাকসু ফি নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু নির্বাচন নেই কেন— জানতে চাইলে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ডাকসুর জন্য যে ফি নেওয়া হচ্ছে, সেটি সংরক্ষিত আছে। ডাকসু নির্বাচন হলে পরবর্তীতে সেটি ব্যয় করা হবে।

থেমে নেই ডাকসু-সংশ্লিষ্ট খরচ

নির্বাচন না হলেও থেমে থাকেনি ডাকসুর জন্য নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেছনের ব্যয়। তারা অফিসে আসছেন, অফিস ঝাড়া-মোছা দিয়েই নিজেদের দায়িত্ব শেষ করছেন। ডাকসু নেতৃত্ব না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা, সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে অলস সময় কাটানো ছাড়া তাদের কোনো কাজ নেই। ফলে প্রতি বছর তাদের বেতন-ভাতা বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের ‘নিদারুণ অপচয়’ বলে মনে করছেন অনেকেই।

ডাকসু কক্ষ ছাত্রলীগের দখলে

অভিযোগ উঠেছে, বর্তমানে ডাকসু ভবনের কক্ষগুলো ছাত্রলীগনেতাদের দখলে। তারা নিয়মিত সেখানে আসেন এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসেন বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া হল সংসদের বরাদ্দ দেওয়া কক্ষেও ছাত্রলীগের হল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য আসন বরাদ্দ রয়েছে। কোনো নেতৃত্ব না থাকায় তারাই রুমটি ছাত্রলীগের ‘হল অফিস’ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।

ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, ডাকসু না থাকায় হলগুলোতে ছাত্রলীগ দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করে গণরুম-গেস্টরুমে মাত্রাতিরিক্ত শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে। হলে অছাত্র, বহিরাগতদের রাখা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, ছাত্রলীগের নেতা তার ড্রাইভারকেও হলের রুমে রাখছেন। ডাকসুর জন্য বরাদ্দ দেওয়া রুমগুলোও তারা নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছেন। নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন হলে ছাত্রনেতারা এসবের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে পারতেন।

বিভিন্ন সময় ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আন্দোলন হলেও কর্ণপাত করছে না ঢাবি প্রশাসন / ছবি- সংগৃহীত

এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, শুধু ছাত্রলীগ নয়, অন্যান্য সংগঠন যেমন- ছাত্রফ্রন্ট ও ছাত্র ইউনিয়নও ডাকসুর কক্ষে মাঝেমধ্যে মিটিং করে থাকে। ডাকসু শিক্ষার্থীদের জায়গা, তারাই সেটি ব্যবহার করবে। শিক্ষার্থী-সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো ডাকসুতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমরা এটি স্বাভাবিকভাবেই দেখে থাকি।

ডাকসু চায় সকল ছাত্র সংগঠন

শিক্ষার্থীদের অধিকারের কথা বলতে, রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো প্রশাসনের কাছে সরাসরি জানাতে ডাকসু নির্বাচন চায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন। এমনকি ছাত্রলীগের নেতারাও সবসময় ডাকসু নির্বাচনের পক্ষে জোর দাবি জানিয়ে থাকেন। সকলে ডাকসু নির্বাচন চাইলেও প্রশাসন বরাবরই ‘সুষ্ঠু পরিবেশ’-এর দোহাই দিয়ে ডাকসু নির্বাচন দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

দীর্ঘ চার বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন না হলেও বন্ধ হয়নি হল ইউনিয়ন ফি ও বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিয়ন ফি হিসেবে ভাতা নেওয়া। প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের সকল ফি-র পাশাপাশি হল ও বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিয়ন ফি হিসেবে ১২০ টাকা করে দিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ৪২ হাজারের অধিক। সে হিসাবে গত চার বছরে ইউনিয়ন ফি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় প্রায় দুই কোটি টাকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য ডাকসু যেভাবে অতীতে ভূমিকা রেখেছে, ভবিষ্যতেও ভূমিকা রাখবে। সেজন্য পুনরায় ডাকসু নির্বাচন দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমরা উপাচার্য স্যারের সঙ্গে দেখা করেছি। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রশাসন যেন ডাকসু নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, সেজন্য আমরা দাবি জানিয়েছি।

গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন বলেন, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের পর ক্যাম্পাসে বাকস্বাধীনতার আবহ তৈরি হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো সরাসরি প্রশাসনকে বলার সুযোগ হয়েছিল। হলের গণরুম-গেস্টরুমে শিক্ষার্থী নির্যাতন কমেছিল। ডাকসু নির্বাচন বন্ধ করে সেই আবহ নষ্ট করা হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ডাকসু নির্বাচন হওয়া জরুরি।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সহাবস্থানের জন্য ডাকসু নির্বাচন জরুরি। তবে, দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে। এখন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত না করে ডাকসু নির্বাচন দিলে ১৯ সালের নির্বাচনের মতোই হবে। কোনো লাভ হবে না। তাই প্রশাসনকে একটি নিরপেক্ষ পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

২০১৯ সালের ২৩ মার্চ ডাকসু সহ-সভাপতি (ভিপি) হিসেবে দায়িত্ব নেন নুরুল হক নুর। তৎকালীন উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জিএস গোলাম রাব্বানীসহ নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত আছেন / ছবি- সংগৃহীত 

ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি (একাংশ) রাগীব নাঈম বলেন, লেজুড়বৃত্তি রাজনীতির কারণে প্রশাসনই চায় না শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকারের কথা বলুক। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকট, পুষ্টিকর খাবার সংকটে ভুগছে। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ডাকসুতে সবগুলো আসন ছাত্রলীগ পেলেও যখন শিক্ষার্থীরা দেখবে তাদের প্রতিনিধিরা কাজ করছে না, তখন তারাই ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবে। তাই আমরা চাই পরিবেশের কথা চিন্তা না করে নির্বাচন নিয়মিত হোক, প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হোক।

অনুকূল পরিবেশ পেলে নির্বাচন দেবে প্রশাসন

প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীরা আশাবাদী থাকেন। কিন্তু গত চার বছরেও নতুন নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা ‘ডাকসু দরকার, ডাকসু শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, অনুকূল পরিবেশ পেলে ডাকসু নির্বাচন দেওয়া হবে’ ইত্যাদি বলে পাশ কাটিয়ে যান। ২০১৯-এর নির্বাচনের পর পরবর্তী নির্বাচনের জন্য আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে— তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, সুন্দর পরিবেশ পেলে আমরা নির্বাচনের আয়োজন করতে পারি। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা কোনো ছাত্র সংগঠনের একার নয়। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করতে হবে।

কেএইচ/এমএআর