৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের ২য় ধাপের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এ সময়ে উভয়পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুর ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে চবি শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ সিএফসি ও বিজয়ের কর্মীরা চবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে অবস্থান করছিল। এ সময় বিজয়ের কর্মীরা মোটরসাইকেল প্রতীক ও সিএফসির কর্মীরা ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মাঝে কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে বিজয়ের কর্মী সালাহ উদ্দিনকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে সিএফসির কর্মীরা। পরে এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে বিকেল ৪টার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে অবস্থান নিয়ে একে-অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন তারা। এ সময় উভয়পক্ষের ১০ জন কর্মী আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সিএফসি নেতা আহসান হাবীব সোপান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীকে নেতা হিসেবে মেনে চলি। আমাদের নেতার স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল আমরা নির্বাচনের সময় ভোট কেন্দ্রে যাব না। এ নির্দেশনা আমি সবাইকে ভোটের আগের রাতে জানিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এরপর যদি কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাহলে এর দায়ভার সংগঠন নেবে না। সংঘর্ষে আমার প্রায় ৯ জন কর্মী আহত হয়েছেন। ওরা হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছে।

চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বিজয়ের নেতা মো. ইলিয়াস বলেন, সিএফসির কিছু বিপথগামী ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা করেছিল। এ সময় আমাদের এক ভাই সালাহ উদ্দিন তাদের এ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বললে তারা তাকে কুপিয়ে জখম করে। সালাহ উদ্দিনকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে দুপুরের দিকে ভোটকেন্দ্রে একটি ছেলেকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে হস্তান্তর করব। তারা এটা তদন্ত করবে। পরে তদন্ত অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া যারা ক্যাম্পাসে অস্র নিয়ে বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ভাবছি।

প্রসঙ্গত, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম রাশেদুল আলম। আর ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি কেন্দ্রের মধ্যে ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ২ হাজার ৪৫ জন ভোটার ও নীপবন শিশু বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার রয়েছে ২ হাজার ২৬৯ জন।

আতিকুর রহমান/এএএ