ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দিন হল ভবনের বড় একটি অংশ দখল করে রাখা কর্মকর্তাদের স্থায়ী অপসারণ ও সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করে  দিতে আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৭ দিনের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ী স্থানান্তরের দাবি জানানো হয়।

রোববার (১৯ মে) বিকেল ৫টা থেকে হলের সামনে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। পরবর্তীতে সন্ধ্যা ৭টার দিকে হল প্রাধ্যক্ষ ৭ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে ঘোষণা দিলে নিজেদের রুমে ফেরত যান শিক্ষার্থীরা।

হলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আশিক নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়াটা ছিল আমাদের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়। আমাদের হলে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরাও সিট পায় না। রুমে ফ্লোরিং করে থাকে। চতুর্থ বর্ষের অনেকে হলে ফ্লোরিং করে থাকেন। এরচেয়ে লজ্জাজনক পরিস্থিতি আর নেই। আমাদের এত কষ্টের মাঝে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সিট দখল করে রেখেছে। অন্তত ১৫০ জন শিক্ষার্থী এখানে অবস্থান করতে পারত। তাদের স্থায়ী অপসারণ করা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবে।

আরেক শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম কেডি বলেন, হলের একটি রুমে যেখানে ৮ জন থাকাও কষ্টকর সেখানে আমাদের ১১-১২ জন করে থাকতে হয়। তৃতীয় বর্ষের অনেক শিক্ষার্থী গণরুমে থাকে। রুম পেলেও তাদের অনেককে ফ্লোরিং করে থাকতে হয়। কর্মচারীরা না থাকলে অনেক শিক্ষার্থী সেখানে সিট পাবে। ফলে আমাদের কষ্ট অনেকটাই কমবে।

আন্দোলন চলাকালে সেখানে উপস্থিত হন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড শাহীন খান। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত কার্যকর করার আশ্বাস প্রদান করেন।

তিনি বলেন, আমার সেন্টিমেন্টের সাথে তোমাদের সেন্টিমেন্টের শতভাগ মিল রয়েছে। আমিও তোমাদের মতোই চাই হলের সে অংশে তোমরা থাকো। আমি এর আগেও মিটিং করেছি এ বিষয়ে। আজকে তোমরা একটি লিখিত স্মারকলিপি আমাকে দাও। আমি ২৬ মে এর মধ্যে তোমাদের দাবি নিয়ে হাউজ টিউটরদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।

প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে হলের একটি অংশে বসবাস করতেন হলটির শিক্ষকরা। পরে তাদের জন্য আলাদা আবাসিক কোয়ার্টার করা হলে সেই স্থানের দখল নেন হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মাসে মাত্র আড়াই হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে অবস্থান করছেন তারা। শিক্ষার্থীদের অংশ দখল করে তাদের থাকায় বেশ কয়েকবার আন্দোলন করেছেন হলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। তবে অজানা কারণে তাদের স্থায়ীভাবে অপসারণের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি হল প্রশাসন।

কেএইচ/এসকেডি