বাবার চিকিৎসার জন্য কিডনি বিক্রি করতে চায় ছেলে ফাতেহ আলী খান আকাশ। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সংগীত বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের (১১ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। বাবা হায়দার আলী খান বর্তমানে হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে জীবনের সঙ্গে লড়ছেন।

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাতে এ শিক্ষার্থী নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কিডনি বিক্রি করার জন্য সহযোগিতা চেয়ে একটি পোস্ট দেন। পোস্টটি দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায়। 

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, আব্বুর হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে। অক্সিজেন মিটার ৩৫% এ নেমে আসছে। জরুরি ভর্তি করাতে হবে। ডাক্তার বলছে পেসমেকার লাগাতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। কিন্তু এই মুহূর্তে পেসমেকার লাগানোর মত এত টাকা আমার কাছে নাই। তাই আমি আমার একটা কিডনি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছি। ঢাকায় কোথায় কিডনি বিক্রি হয়? এক কিডনি নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবো, আব্বুকেও বাঁচাতে পারবো।

এ বিষয়ে ফাতেহ আলী খানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বুধবার বাবাকে হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করাবো। সেখানে বাবার চিকিৎসা শুরু হবে। বাবার শরীরে পেসমেকার লাগানোর কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু এ মুহূর্তে পেসমেকার লাগানোর মতো টাকা আমার কাছে নেই। সেজন্যই কিডনি বিক্রি করার জন্য ফেসবুকে আমার পোস্ট দেওয়া। আমার কিডনি বিক্রি করে হলেও বাবার চিকিৎসা করাতে চাই।

ফাতেহ আলীর বন্ধু মহিউদ্দিন রিফাত বলেন, গান পাগল ফাতেহ আলী খান আকাশ। সারাদিন গান নিয়ে মেতে থাকে। পড়াশোনা করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগে। কতটা অসহায় পরিস্থিতির শিকার হলে ছেলে তার বাবার জন্য নিজের কিডনি বিক্রি করতে চায়? আকাশের বাবার (হায়দার আলী খান) জীবন বাঁচতে সবাইকে মানবিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি।

এ বিষয়ে সংগীত বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিভাগের উদ্যোগে ফান্ড কালেকশনের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এতে ভালো সাড়াও পাচ্ছি। কিছু দিন আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য কনসার্টের আয়োজন করে ফান্ড কালেকশন করা হয়েছে, সেখানে আকাশের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। আকাশের এই বিপদে সবাই যার যার জায়গা থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

উল্লেখ্য, ফাতেহ আলী খান ক্যাম্পাসে গানের জন্য জনপ্রিয়। এছাড়া তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিভিন্ন ব্যান্ড দলের সমন্বয়ে গঠিত ব্যান্ড মিউজিক এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

সাহায্য পাঠানো যাবে ফাতেহ আলী খানের বিকাশ নম্বরে : 01799510783, এছাড়া নগদ : 01603581638, ডিবিবিএল : 7017341975820 

এমএল/এমএসএ