চলমান তীব্র দাবদাহে ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ অস্বস্তিতে রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির পারদ স্পর্শ করছে। যার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২১ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাস চলমান রয়েছে। তবে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসীম উদ্দিন হল প্রশাসন। তীব্র গরম থেকে শিক্ষার্থীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে হলের ছাদে পানি দিয়ে তাপ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) থেকে জসীম উদ্দিন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহীন খানের উদ্যোগে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। চলমান দাবদাহ যতদিন থাকবে ও বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এমন কাজ চলমান থাকবে বলে হল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

হল সূত্রে জানা যায়, পাঁচতলা হলের দুটি ব্লকের ছাদ সূর্য ওঠার আগেই পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া হয়। এতে সূর্য ওঠার পরও সূর্যের আলো সরাসরি ছাদে না লাগায় তাপ সহজে বিকিরণ হয় না। আর শোষিত পানি বাষ্পীভূত হয়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বাইরে প্রচণ্ড দাবদাহ থাকার পরও হলের কক্ষে কিছুটা স্বস্তিতে থাকেন হলের শিক্ষার্থীরা। তাছাড়া ছাদে পানি থাকায় ছাদ তুলনামূলক ঠান্ডা থাকে। এতে প্রচণ্ড গরমেও কিছুটা ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে হলের আশপাশে।

হল প্রাধ্যক্ষের এমন উদ্যোগকে সাদরে গ্রহণ করেছেন জসীম উদ্দিন হলের শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পেরে প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তারা।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আজাদী সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, যখন প্রচণ্ড রোদ থাকে তখন ছাদে পানি দেওয়ার ফলে তাপ কম লাগে, যা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এমন উদ্যোগের জন্য আমরা প্রাধ্যক্ষ স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।

আরেক শিক্ষার্থী হাসান বলেন, হল প্রাধ্যক্ষ শাহীন স্যার এমন একটি সুন্দর উদ্যোগ নিয়েছেন, যা আমাদের জন্য অনেক প্রশান্তিময় হয়েছে। এই গরমে যেখানে বাইরে বের না হলেও রুমে থেকে সেদ্ধ হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয় সেখানে ছাদে পানি দেওয়ায় আশেপাশের পরিবেশ কিছুটা হলেও কম উত্তপ্ত থাকে। আর ছাদের তাপ সরাসরি রুমে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ে না। এতে রুমে বসে একটু স্বস্তির নিশ্বাস নেওয়া যায়। হল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা স্যারকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহীন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সকালে সূর্য ওঠার আগে ছাদটা পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিই। যেমনটা বৃষ্টি এলে ছাদটা ভিজে থাকে। এর ফলে দুপুর পেরিয়ে বিকেল পর্যন্ত ছাদটা কিছু ঠান্ডা থাকে এবং সন্ধ্যার দিকে যেই তাপের তীব্রতা অনুভব হওয়ার কথা সেটা অনেকটাই কম হয়। বাইরের প্রচণ্ড দাবদাহে হলের পাঁচতলায় শিক্ষার্থীদের থাকতে অনেক কষ্ট হয়। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের কিছুটা প্রশান্তি, কিছুটা স্বস্তি দিতেই হল প্রশাসন থেকে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি কৃত্রিমভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের নেই, তবে আমাদের যেটুকু সামর্থ্য আছে সেটুকু কাজে লাগিয়ে আমরা পরিবেশকে কিছুটা ঠান্ডা করার চেষ্টা করছি।

কেএইচ/এসএসএইচ