ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের গেস্টরুমে তীব্র গরমে এক শিক্ষার্থীর জ্ঞান হারানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তীব্র গরমের মধ্যেও দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে সে জ্ঞান হারায় বলে জানা যায়।

গতকাল (২৩ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে বিজয় একাত্তর হলের গেস্টরুমে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তী সময়ে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তবে সিনিয়রদের বাঁধার কারণে তাকে মেডিকেলে নেননি তার বন্ধুরা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন।

ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম নিয়ামুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে রুটিনমাফিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের গেস্টরুমে ডাকেন হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তারা উভয়েই হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি আহম্মেদের কর্মী। রাব্বি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলেন, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে গেস্টরুমে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া ছাত্রলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে রাত ১০টার দিকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন ওই শিক্ষার্থী। পরে তাকে গণরুমে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মাথায় পানি দেয় তার বন্ধুরা। সিনিয়র ছাত্রলীগ কর্মীরা এসে ঘটনাটি যাতে বাইরে প্রকাশিত না হয় সেজন্য ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিতে নিরুৎসাহিত করেন।

এর আগে কয়েকবার গরমের কারণে তার খারাপ লাগার কথা জানালেও তাতে কর্ণপাত করেননি ছাত্রলীগের কর্মীরা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, গেস্টরুমে গরমের কারণে আমি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম। তখন বন্ধুরা ধরে রুমে নিয়ে আসে এবং মাথায় পানি দেয়। এখন আমি সুস্থ আছি।

তবে এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি আহম্মেদকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহ মিরানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আবাসিক শিক্ষক মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসান। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য বলা হয়।

সার্বিক বিষয়ে বিজয় একাত্তর হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আমি ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছি। তারা ৭ কার্য দিবসের মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট প্রদান করলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

কেএইচ/এসএম