রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান ভবন ধসের দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বলেন, এমন একটি ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া হয়েছে যারা সর্বোচ্চ স্তরের দুর্নীতিবাজ। এর আগে তারা বলিশ-কাণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন এদেরকে কাজ দিয়েছে? এত বড় একটি ঘটনা ঘটার পরও কেন তারা চুপ করে আছে?

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তারা যাদেরকে কাজ দিয়েছে এরা বালিশ-কাণ্ডসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে কাজ দিয়েছে। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এর সঙ্গে জড়িত।

এ সময় আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসুদ বলেন, আমরা নিজ দায়িত্বে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি। নির্মাণাধীন ভবন ধস আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি কোম্পানি এই কাজের সঙ্গে জড়িত। তারা তাদের কুকর্ম বজায় রেখে নিম্নমানের জিনিস দিয়ে কাজ করেছে। ফলে ভবন ধসে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এ ঘটনায় গুরুত্ব না দিয়ে দায়সারাভাবে তদন্ত প্রতিবেদন করছে। আমরা অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

মানববন্ধনে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার প্রতিবাদ করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি হবে আর আমরা তা সহ্য করবো, এটা হতে পারে না। আমরা যখন এগিয়ে চলেছি তখন এই দুর্নীতি নামক কালসাপ আমাদেরকে টেনে ধরেছে। আমাদের দাবি অবিলম্বে এই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জাতির সামনে প্রকাশ করা হোক এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্ত বলেন, বুয়েট থেকে ভালো বিশেষজ্ঞ এনে ভবন পরীক্ষা এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। যদি সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি করতে প্রশাসন ব্যর্থ হয় তাহলে তারা নিজেরাই গণতদন্ত করে মিডিয়ার মাধ্যমে এ প্রতিবেদন জমা দেবেন।

মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, বাম সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলের অডিটোরিয়ামের ছাদের সাটারিং ধস এবং হলের যেসব কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে সেগুলোর গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সাত কর্মদিবসে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা হলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

জুবায়ের জিসান/এমজেইউ