গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনাকারী ব্যক্তিরা বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ার পরও গুচ্ছের দায়িত্ব তাদের হাতেই দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি  (জবিশিস)। একইসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চাপিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে শিক্ষকদের এই সংগঠন।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এসময় তারা ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় যেতে ১০ দফা দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভর্তির ব্যবস্থা চালু করলেও তাতে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ মোটেও কমেনি, বরং বেড়েছে। শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ বৃদ্ধির কারণগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি গুচ্ছ পরিচালনাকারীরা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, যারা গুচ্ছ প্রক্রিয়ার মতো সরকারের এত সুন্দর একটি উদ্যোগকে ব্যর্থ করলেন, তাদের হাতেই বারবার গুচ্ছ ভর্তির দায়িত্ব বর্তিয়েছে। আমরা অতীতের কার্য বিবেচনায় এবারের গুচ্ছ ভর্তির সাফল্য নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছি। তাই আমরা চাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা বজায় রাখতে আগের নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে।

এসময় জবিশিস সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, যারা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি, তারাই পুনরায় দায়িত্ব পেয়েছে। তাছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গতিকে ব্যাহত করার জন্যই একটি পক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। গত বছর বলা হলো সবাই একক ভর্তি পরীক্ষার আওতায় আসবে। কিন্তু একক ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে না। একরকম আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে গুচ্ছতে থাকতে।

এসময় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকতে ১০ দফা দাবি জানায় শিক্ষক সমিতি। এগুলো হলো– আগামী ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এনটিএ গঠনের মাধ্যমে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একক ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে ক্লাস শুরু করতে হবে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত স্কোর ও মেধাক্রম প্রকাশ, ভর্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা ও মাইগ্রেশনের জটিলতা নিরসন, আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের সমন্বয়ে শক্তিশালী একটি নিরীক্ষা টিম গঠন করে গত তিন শিক্ষাবর্ষের আয় ও ব্যয়ের নিরীক্ষা কার্য সম্পন্ন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা বুঝিয়ে দিতে হবে, দেশের সব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা গুচ্ছ করতে হবে, শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা অনুযায়ী ভর্তি পূর্ণ করতে হবে, ভর্তির আবেদন ফি কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে, ভর্তি আবেদন ফি ব্যতীত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন, মাইগ্রেশন, ভর্তি বাতিল বা অন্য কোনো কারণে অর্থ প্রদান করবে না– তা নিশ্চিত করতে হবে, গুচ্ছভুক্ত ২২টির মধ্যে আসন সংখ্যা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ না করে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক আবেদনের সংখ্যা অনুযায়ী অর্থ প্রদান করতে হবে, পরীক্ষা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহ করতে ও এর স্বচ্ছতার জন্য একটি সুস্পষ্ট আর্থিক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

এমএল/এসএসএইচ