ঢাবির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দ অপসারণের দাবি
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে বিতর্কিত ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দের প্রত্যাহার করার মাধ্যমে চলমান বিতর্কের নিরসন করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে রাজপথে নেমে আসবে এবং দাবি আদায় করে তবেই পড়ার টেবিলে ফিরে যাবে বলে জানান তারা।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলেন৷
বিজ্ঞাপন
এসময় শিক্ষার্থীরা ১ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দটি প্রত্যাহার করে সংশোধিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বরাবর অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন
অভিধানে ট্রান্সজেন্ডার শব্দের অবিধানিক অর্থ ভিন্ন উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দটি আমাদের দেশীয় শব্দ নয়। এমনকি বাংলা একাডেমির অভিধানে কোথাও ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দটির কোনো উল্লেখ নেই।
একটি বিতর্কিত শব্দকে কেন ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে যুক্ত করা হলো তা- আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে এই শব্দ সংযুক্তির মাধ্যমে দেশীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির উপর আঘাত করা হয়েছে। আমাদের দেশজ সংস্কৃতি রক্ষায় এই শব্দটি প্রত্যাহার করা অত্যন্ত জরুরি। তাছাড়া হিজড়া সম্প্রদায়কে বোঝাতে ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি ব্যবহার করলে হিজড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার খর্ব হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। 'ট্রান্সজেন্ডার' শব্দের ব্যবহার হিজড়া ব্যতীত একটি ভিন্নগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ তৈরি করে। যারা হিজড়াদের অধিকারকে ফসলের আগাছার ন্যায় ছিনিয়ে নিতে পারে। তাই হিজড়া জনগোষ্ঠীদের প্রকৃত অধিকার রক্ষায় অবিলম্বে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে এই 'ট্রান্সজেন্ডার' শব্দটি প্রত্যাহার করা হোক।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্যের বিরোধিতা করে তারা বলেন, সম্প্রতি ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু নিয়ে জাতীয় মানবধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের একটি বক্তব্য আমাদের নজরে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই তার বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কখনোই হিজড়া জনগোষ্ঠীর কোটার বিরোধীতা করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হিজড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার জন্যই আন্দোলন করে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, মানবধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এর এই অবিবেচনা প্রসূত বক্তব্য শিক্ষার্থীদের ক্ষোভকে আরও উসকে দেবে। যা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে- আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া, আরবী বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান রাফি, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক ইবনে মুহাম্মদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এমএসএ