ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত না নিলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।
মঙ্গলবার (২৯ই ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে হল খুলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত অর্থাৎ স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলে পরীক্ষা নেয় তাহলে আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবো। আর যদি শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত না আসে তাহলে আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেব।
শিক্ষার্থীরা নানাভাবে প্রশাসনের দৃষ্টি অকর্ষণ করে চলছে, তারপরও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা, অনিশ্চয়তা আর ক্ষোভ সৃষ্টি করছে।
বিন ইয়ামিন মোল্লা, ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি
হল খোলার বিষয়ে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগ ও অনুষদ ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়ার তারিখ ও রুটিন ঘোষণা করেছে। এমতাবস্থায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীর জন্য থাকার জায়গার ব্যবস্থা করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য রীতিমত একটি ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীরা নানাভাবে প্রশাসনের দৃষ্টি অকর্ষণ করে চলছে, তারপরও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা, অনিশ্চয়তা আর ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছে না।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির ঢাবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাকিল মিয়া, সদস্য আকরাম হোসেন, মোহাম্মদ রাসেল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে আজ ৭ম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্র অধিকার পরিষদ।
কবে থেকে বন্ধ হল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কী অবস্থা
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷ গত জুন থেকে অনলাইনে ক্লাস চললেও কোনো পরীক্ষা হয়নি। অফিস-আদালত, দোকানপাটে মানুষের উপস্থিতি অনেকটা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি কয়েক দফায় বাড়িয়েছে সরকার। সর্বশেষ ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে। করোনার কারণে এ বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা/মূল্যায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া গত ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে বাতিল করে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জুনে এসএসসি, জুলাইয়ে এইচএসসি
পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে তবে আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা জুনে ও এইচএসসি পরীক্ষা জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মন্ত্রী জানান, ২০২১ সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হবে। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং বিশেষজ্ঞ একটি কমিটি কাজ করছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি এসএসসি ও ২৯ জানুয়ারির মধ্যে এইচএসসির সংক্ষিপ্ত সিলেবাস জানিয়ে দেওয়া হবে।
এ ছাড়া এবার বই উৎসব হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। একদিনে বই বিতরণ না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট ১২ দিনে শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে স্কুল থেকেই বই বিতরণের এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান মন্ত্রী।
এনএফ