স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের শান্তিডাঙ্গার দুলালপুরে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে যাত্রা শুরু হয় ইবির, যা আজ (২২ নভেম্বর) নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৪৫ বছরে পা দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের উচ্চ বিদ্যাপীঠের প্রতিটি শিক্ষার্থীর আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় তা নিশ্চিত করতে পারেনি ইবি কর্তৃপক্ষ। যার ফলে চার দশকেও আবাসন সমস্যা এই বিদ্যাপীঠের ‘অভিশাপ’ হয়েই আছে। তবে নির্মাণাধীন চারটি দশতলা হলের ভবনের কাজ শেষ হলে ভোগান্তি কমবে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

প্রতি বছর দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এর ফলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিয়ে কর্তৃপক্ষকে প্রতি বছরই সমস্যায় পড়তে হয়। সমস্যা নিরসনে আবাসিক হল বাড়ানোর বা ভারসাম্য বজায় রেখে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর কোনো দৃশ্যমান ভূমিকাও দেখা যায় না কর্তৃপক্ষের। শিক্ষার্থীরা বারবার এ সংকট থেকে মুক্তি চাইলেও আশ্বাস ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ইউজিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি আবাসিক হল রয়েছে। যার মধ্যে ছেলেদের পাঁচটি ও মেয়েদের তিনটি। এসব হলে ৩ হাজার ৫৯৪ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা আছে। যার মধ্যে ১ হাজার ৯৪৬ জন ছাত্র ও ১ হাজার ৬৪৮ জন ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ হাজার ৫৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা আছে। আর বাকি ৭৬ শতাংশের জন্য নেই কোনো আবাসনের ব্যবস্থা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, চার দশকে একটা বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে সম্পূর্ণ আবাসিক সুবিধা দিতে পারে। এছাড়া আবাসিক সুবিধার আলোকেই এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। শুধু সদিচ্ছার অভাব এবং রাজনৈতিক কারণে এ আবাসন সংকট তৈরি করে রাখা হয়েছে।

লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রান্তিক পর্যায় থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছি। বাসা ভাড়া নিয়ে থাকার সামর্থ্য নেই বলে স্বপ্ন ছিল হলে আমার একটি সুন্দর ঠিকানা হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, চার দশকের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজও আমাকে মাথা গোঁজার ঠিকানা করে দিতে পারেনি।

তবে নতুন হলসহ আবাসিক হলগুলোর ভবন সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে আবাসন সংকট অনেকটাই দূর হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমাদের অতীতের যেমন ঐতিহ্য রয়েছে, তেমনি ব্যর্থতাও রয়েছে। আমরা সকল ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো।

এমজেইউ