অবরোধের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় ব্যানার লাগানো ও বিভিন্ন গেইটে তালা লাগাতে এসে ছাত্রলীগের হাতে আটকের পর মারধরের শিকার হয়েছেন ছাত্রদলের দুই নেতা। মারধরের পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশ প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে যায়। এরপর আজ দুপুরে তাদের নাশকতার মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।

মারধরের শিকার ছাত্রদল নেতারা হলেন- অমর একুশে হলের সিনিয়র সহ-সভাপতি খান মো. জসিম ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের মিশুক। তবে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পরিচয় জানা যায়নি।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অবরোধের সমর্থনে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ফটকে ব্যানার ও তালা লাগানোর জন্যে যায় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এ সময় কার্জন হল এলাকায় অবস্থানরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের দেখে অতর্কিত হামলা চালায় এবং বেধড়ক মারধর করে। এসময় বাম পায়ে গুরুতর আঘাত পান ইমাম আল নাসের মিশুক। গুরুতর আহত হন জসিমও। পরে তাদের শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

থানা সূত্রে জানা যায়, আহত ছাত্রদল নেতাদের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে এক্সরে ও প্লাস্টার করার পর রাত পৌনে তিনটার দিকে তাদের পুনরায় শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। পরে আজ বুধবার দুপুরে তাদের নাশকতার মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। 

কর্মসূচিতে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেওয়া ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম তারিক বলেন, জসিম ও মিশুকের ওপর এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। অন্যথায় যে কোনো ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দালাল প্রশাসনকেই নিতে হবে।

ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাত জেগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পাহারা দেয় যেন কেউ অগ্নিসন্ত্রাস করতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কেউ অগ্নিসন্ত্রাস করতে চাইলে তার হাতে যেন আমরা আগুন ধরিয়ে দেই। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গতকাল রাতে নাশকতা করতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের গণধোলাইয়ের পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ বলেন, আটকদের গতকাল রাতে আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাদের নামে পূর্বে মামলা ছিল। তাই তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজ দুপুরে কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়েছে।

কেএইচ/এমজে