ইবিতে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য থামছে না
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগসমূহের কাজ চলে কচ্ছপ গতিতে। বিভিন্ন কাজে নিতে হয় প্রশাসনের অনুমতি। অনেক সময় প্রশাসনকে দেওয়া ফাইল হারিয়ে ফেলেন তারা। ফলে এক কাজের অনুমোদনের জন্য একই ফাইল ৩ থেকে ৪ বার দেওয়া লাগে। কর্মকর্তাদের গাফিলাতির ফলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বারবার অভিযোগ করলেও এ বিষয়ে উদাসীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো কাজ অনুমোদনের জন্য প্রশাসন বরাবর ফাইল জমা দিতে হয়। ফাইল অনুমোদন হতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ মাস। আবার অনেক ফাইল হারিয়ে ফেলেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। পুনরায় নতুন করে ফাইল জমা দিতে হয়। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হন তারা। এছাড়া ফাইল অনুমোদন হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সিন্ডিকেট কাজ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দপ্তর প্রধানরা বলেন, আমরা সময়মতো ফাইল জমা দেই। অনুমোদন করতে ঘাম ঝড়ে যায়। এছাড়া ফাইল জমা দেওয়ার পরে কয়েকদিন পর খোঁজ নিতে গেলে তা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। সময়মতো কাজ না হওয়ার কারণে কাজে বিলম্ব হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পিছিয়ে যাচ্ছে।
কয়েকজন বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভাগের নানা কাজে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। পরীক্ষা বা রিটেক পরীক্ষাসহ বিভাগের অন্যান্য কাজে প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন হয়। অনুমতি নিতে ফাইল জমা দেন তারা। কিন্তু প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঠিকমতো কাজ করেন না। ফলে ফাইল অনুমোদন হতে দেরি হয়।
সম্প্রতি গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক মিলন কুমার ঘোষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সেমিনারে অংশ নিতে ৪ থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটির ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। সেই ছুটির অনুমোদন হয় আবেদনে উল্লিখিত নির্ধারিত তারিখের ২০ দিন পর। পরবর্তীতে তিনি ছুটি অনর্থক দাবি করে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, আমি যথাসম্ভব ফাইল ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার এখান থেকে ফাইল অনুমোদন হয়ে অন্য কোথাও পড়ে থাকলে তো আমি বলতে পারব না। এজন্য সকলকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
ফরেন সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তফা জামাল হ্যাপি বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফরেন সেল নামে একটা অফিস আছে। শুধু নামেই আছে, এর জন্য খাতা কলমে কোনো অফিস নেই। এখনও কোনো লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে বারবার কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, যদি কেউ এরকম সমস্যা ফেস করে তাহলে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানাতে হবে। তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে।
রাকিব হোসেন/এএএ