ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে  চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক। শনিবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর বেসরকারী বিআরবি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

হাসপাতালে উপাচার্যের সঙ্গে থাকা নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. ইসরাফিল হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে  নিশ্চিত করেছেন। 

হাসপাতাল থেকে জানাযার উদ্দেশ্যে উপাচার্যকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হচ্ছে। এদিন সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েসহ পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। উপাচার্যের মৃত্যুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা শোক প্রকাশ করেছেন।

এর আগে ক্যান্সারের উন্নত চিকিৎসা নিতে অধ্যাপক ইমদাদুল হক গত ১২ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন। সেখানে তার রেডিও থেরাপি সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে শারিরীক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তিনি গত ১২ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন। 

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও ডীন ড. ইমদাদুল হক। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ বছরেই সততার ক্যাম্পাসে নানা উন্নয়নমূলক ও অভূতপূর্ব একাডেমিক অগ্রগতিতে কৃত্বিত অর্জন করেন।

অধ্যাপক ইমদাদুল হক একজন বাংলাদেশি উদ্ভিদবিজ্ঞানী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য। তিনি ২০২১ সালের ১ জুন চার বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য পদে নিয়োগ পান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হন।

অধ্যাপক ইমদাদুল হকের জন্ম পাবনা জেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৭৮ সালে এমএসসি এবং ১৯৮৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি একাধিক পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেছেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি ঢাবির জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও সদস্য, বাংলাদেশ উদ্ভিদবিজ্ঞান সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি একাধিক পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য। এছাড়া তিনি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবেও ভূমিকা রেখেছেন। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন জার্নালে তার ৮০টির বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তিনি একাধিক বইয়ের সহ-সম্পাদক।

এমএল/এমএসএ