জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) কর্মরত অধ্যাপকদের থেকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। 

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে এ দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেন। মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় জবি নীলদলের দুপক্ষের সম্মতিতে এ প্রস্তাবনা পাস হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে বর্তমান উপাচার্য এবং ট্রেজারারের মেয়াদ শেষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অধ্যাপকদের মধ্য থেকে উপাচার্য এবং ট্রেজারার নিয়োগ প্রদান করার জন্য শিক্ষকবৃন্দ ঐকমত্য প্ৰকাশ করেছেন। 

এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় সমিতির সদস্যবৃন্দ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত অধ্যাপকদের দক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা সাপেক্ষে যেকোনো একজনকে কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দানের জন্য সরকারের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে মত প্রকাশ করেন।  

শিক্ষক নেতারা জানান, জবিতে বর্তমানে গ্রেড-১ পদে ৩৬ জন, গ্রেড-২ পদে ৪৬ জন এবং গ্রেড-৩ পদে ৭৪ জন মিলিয়ে সর্বমোট ১৫৬ জন অধ্যাপক আছেন। এর মধ্যে দুজন অধ্যাপককে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে এবং দুজন অধ্যাপককে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছেন এবং তারা সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও প্রাইভেট বিশ্বদ্যিালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক বর্তমান দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে নিজ শিক্ষকদেরই যোগ্যতা আছে বলে মনে করেন তারা। 

এ বিষয়ে জবি নীল দলের একাংশের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক যখন নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই দায়িত্ব পান তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিষয়ই জানা-শোনা থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করতে সুবিধা হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভালো-মন্দ বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেন। কাজে গতিশীলতা থাকে।

এ অংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান বলেন, বাইরের ভাড়াটিয়া উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষরা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের মনে করে না। তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকে। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা বৃদ্ধি ও শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে গুরুত্ব দেয় না। ১৮ বছর বয়সী বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়টি আক্ষরিক অর্থে এখনও একটি কলেজের অবকাঠামোর মধ্যেই গেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন পরিচালনার জন্য সক্ষম ও যোগ্য। 

একই কথা বলেন অপর অংশের সভাপতি অধ্যাপক ড.নূর আলম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে আমাদের সকলের দাবি এক। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকেই দায়িত্ব দেওয়া হোক। 

একই কথা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সাবেক ডিন ও নীল দলের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড.জাকারিয়া মিয়া। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে বিষয়ে একমত হয়েছে এটার সাথে আমি একমত। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক যোগ্য শিক্ষক আছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.আইনুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে শিক্ষকরা সবাই একমত হয়েছেন। শিক্ষকরা তাদের দাবি জানিয়েছেন। 

এমএল/এনএফ