জবিতে অনলাইনে সিন্ডিকেট সভার ঘোষণা, শিক্ষকদের অসন্তোষ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) তড়িঘড়ি করে রোববার (২৯ অক্টোবর) অনলাইনে ৯৩তম সিন্ডিকেট সভার ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উপাচার্য অসুস্থ থাকায় কেন তড়িঘড়ি করে এই সিন্ডিকেট সভার আহ্বান, কে সভাপতিত্ব করবেন, এর নেপথ্যে কী রয়েছে— এমন সন্দেহ সিনিয়র শিক্ষকদের। এছাড়া বেশ কিছু সিলেকশন বোর্ড অনুষ্ঠিত না হওয়ায় বৈষম্যের শিকার হবেন বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় সিন্ডিকেট পেছানোর এক সিদ্ধান্ত জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বরাবর একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
চিঠিতে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে পদোন্নতি বা আপগ্রেডেশন সংক্রান্ত কিছু সিলেকশন বোর্ড সম্পন্ন হলেও এখনো বেশ কিছু সিলেকশন বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়নি। সেপ্টেম্বরে কিছু বোর্ড হলেও গত জুলাই বা তারও পূর্বে আবেদন করে এবং সব শর্ত পূরণ করেও নানা কারণে অনেকের বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে পদোন্নতি প্রত্যাশী সহকর্মীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
আরও বলা হয়, তাই রোববার ৯৩তম সিন্ডিকেট সভা হতে পারে, তবে যেসব সহকর্মীর সিলেকশন বোর্ড করা সম্ভব হয়নি, তাদের বোর্ড যখনই হোক না কেন, তাদের পদোন্নতি ২৯ অক্টোবর তারিখ থেকেই কার্যকর হবে। এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন হলেই কেবল ইতঃপূর্বে সম্পন্ন হওয়া বোর্ডগুলোর সুপারিশ সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা যেতে পারে। অন্যথায়, সিন্ডিকেট সভা পিছিয়ে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে সব বোর্ড সম্পন্ন করে সিন্ডিকেটের জন্য পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা যেতে পারে।
শিক্ষক সমিতি আরও জানায়, শিক্ষকদের সাধারণ সভায় বর্তমান উপাচার্য স্যারের প্রায় অচেতন বা অর্ধচেতন (হাসপাতাল ও পরিবার সূত্র মতে) অবস্থায় প্রথাবিরোধী এবং আনঅফিসিয়াল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন পদে নিয়োগের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল স্বাক্ষর করার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। এ নিয়ে অধিকাংশ সহকর্মী অসন্তোষ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রশাসন কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী প্রশাসনিক শৃঙ্খলা অনুসরণ করার জন্য সভায় মতামত ব্যক্ত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জবিতে ৬৭ জন কর্মচারীর নিয়োগসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সিন্ডিকেট অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। একটি অসাধু নিয়োগ বাণিজ্য চক্র পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে তড়িঘড়ি করে ট্রেজারারের অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদের মাধ্যমে সিন্ডিকেট সভার আয়োজন করতে চায়। যদিও ট্রেজারারের সিন্ডিকেট সভা ডাকার ক্ষমতা নেই। উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক রাজধানীর পান্থপথে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসারত লাইফ সাপোর্টে আছেন। সে কারণে রোববার তার পক্ষে সিন্ডিকেট সভায় অংশগ্রহণ করা অনেকটা অনিশ্চিত।
এ বিষয়ে জবির সাবেক ট্রেজারার ও একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের অধ্যাপক ড. শওকত জাহাঙ্গীর বলেন, শুনেছি উপাচার্য স্যার খুবই অসুস্থ। তিনি চিঠি সাক্ষর করে, নাকি ফোনে বলে সিন্ডিকেট ডেকেছেন রেজিস্ট্রার বলতে পারবেন। তবে সিন্ডিকেট সভার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড ছিল, সেগুলো দুইবার ডেকেও স্থগিত করা হয়েছে। বোর্ডগুলো নিয়ে সিন্ডিকেট সভা করলে ভালো হবে। এতে শিক্ষকদের মধ্যে সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে বৈষম্য থাকবে না।
এমএল/কেএ