প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার অপেক্ষায় ঢাবি ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের ১৩ দিন পর গত বছরের ২০ ডিসেম্বর রাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি ঢাবির আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সভাপতি হিসেবে মাজহারুল কবির শয়ন ও সেক্রেটারি হিসেবে তানভীর হাসান সৈকতের নাম ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে গত ১৪ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর থেকেই আলোচনায় রয়েছে ঢাবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রসঙ্গ। তবে, শয়ন ও সৈকতের নেতৃত্বাধীন কমিটির ৯ মাস পার হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি। এ নিয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে।
বিজ্ঞাপন
তবে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীদের আশার বাণী শুনিয়েছেন সভাপতি শয়ন ও সম্পাদক সৈকত। খুব শীঘ্রই ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসছে বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন এ দুই নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটির যাবতীয় কাজ ও যাচাই-বাছাই সমাপ্ত হয়েছে জানিয়ে এ দুই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাই, কমিটির ঘোষণা দিতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তার দেওয়া তারিখ অনুযায়ী কমিটি ঘোষণা করা হবে।
গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে সৈকত বলেছিলেন, সেন্ট্রাল কমিটির আগে কেউ তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারে না। তাই, কমিটি দিতে এত দেরি হচ্ছে।
১৪ জুলাই কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান এ নেতা। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন-
কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি ছাত্রলীগের ঢাবি শাখা। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সাংগঠনিকভাবে ঢাবি শাখার মর্যাদা জেলা পর্যায়ের। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ১০ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘জেলা শাখার কার্যকাল এক বছর’। সেই হিসেবে চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর শেষ হবে শয়ন-সৈকতের নেতৃত্বে বর্তমান কমিটির মেয়াদ।
গত জুন মাসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। তখন ঢাবির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে সিভি জমা নেয় ঢাবি ছাত্রলীগ। কিন্তু, তখন সেটা আর আলোর মুখ দেখেনি।
কমিটি ঘোষণায় দেরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রলীগের একজন পদ প্রত্যাশী নেতা বলেন, একটি কমিটির মেয়াদ থাকে এক বছর। ইতোমধ্যে ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা পদপ্রত্যাশীরা এখনো আশানুরূপ কিছু দেখিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই মেধাবী এবং তাদের একটা ক্যারিয়ার আছে। কমিটি দিতে এত বিলম্ব হওয়ায় অনেকের ক্যারিয়ার হুমকিতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু একটি কমিটিতে সবাইকে পদায়ন করা সম্ভব নয়। তাছাড়া, নির্বাচন কেন্দ্রিক অনেক চাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। নেতারা কোনো পদে না থাকায় সেগুলো মোকাবিলা করা অনেকটাই কঠিন হচ্ছে।
খুব দ্রুতই কমিটির ঘোষণা আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে জহুরুল হক হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফরিদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সবসময়ই গতিশীল ধারা অবলম্বন করে আসছে। সেন্ট্রাল কমিটি হয়েছে বেশিদিন হয়নি। তাছাড়া, নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী মাসেই ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারে। সে হিসেবে আমি মনে করছি- খুব দ্রুতই নেতৃবৃন্দ কমিটি দিয়ে দিবেন।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কমিটির কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। শুধু প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছি। তিনি দেশে ফিরলে অনুমতি নিয়ে আমরা কমিটি ঘোষণা দেবো।
সেক্রেটারি তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আগস্ট মাসে কমিটি না দেওয়াটা যেমন আমাদের ঐতিহ্য, ঠিক তেমনই প্রধানমন্ত্রী দেশে না থাকলে কমিটি দেওয়া যায় না। তিনি দেশে ফিরলে আমরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি তারিখ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা করবো।
কেএইচ/এমজে