অসদাচারণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ্-উল-ইসলামকে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পদাবনতি করে অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভায় সভাপতিত্ব করেন।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অধিদপ্তরের পরিচালক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ও ট্রাইব্যুনালের সুপারিশক্রমে সিন্ডিকেটের এক সভায় উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পদাবনতির এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’

২০১৮ সালের ১৪ মার্চ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মেজবাহ্-উল- ইসলামের বিরুদ্ধে সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তিনি তার কক্ষে সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলামকে মারধর করেন। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগ পত্রে আনোয়ারুল ইসলাম উল্লেখ করেন, সন্তানের অসুস্থতার কারণে সোমবার (১৩ মার্চ ২০১৮) বিভাগের একাডেমিক মিটিংয়ে আসতে না পারায় পরের দিন মঙ্গলবার ক্লাস নিতে এলে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেজবাহ-উল ইসলাম একাডেমিক মিটিংয়ে কেন আসতে পারেননি বলে তার কৈফিয়ত চান। এসময় এ শিক্ষককে গালিগালাজ এবং তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

এদিকে একই দিন বিকেলে বিভাগের সন্ধ্যাকালীন প্রোগ্রামে ক্লাস নিতে এলে বিভাগের কর্মচারী দিয়ে আনোয়ারুলকে ডেকে আনেন ড. মেজবাহ-উল ইসলাম। পরে চেয়ারম্যানের রুমে গেলে চেয়ারম্যান তাকে অনেক গালিগালাজ করেন এবং কেন মিটিংয়ে আসেনি তার কারণ জানিয়ে দরখাস্ত দিতে বলেন। আনোয়ারুল দরখাস্ত না দিয়ে ছুটির ফরম জমা দেবেন জানালে তখন অন্য সহকর্মীদের সামনে চেয়ারম্যান তার (আনোয়ারুল) শার্টের কলার ধরে তাকে ধাক্কা দেন। এসময় সহকর্মীরা চেয়ারম্যানকে আটকানোর চেষ্টা করেন। পরে তারা চলে গেলে চেয়ারম্যান মেজবাহ ফের আনোয়ারুলের ওপর চড়াও হন এবং তাকে লাথি ও ঘুষি দেন।

পরে ভুক্তভোগী শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের বিষয়ে তখন অধ্যাপক মেজবাহ-উল-ইসলাম বলেছিলেন, ‘আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি একাডেমিক মিটিংয়ে সমাধান হয়ে গেছে।’ তবে দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর পর বিষয়টি সিন্ডিকেটে উঠলে অধ্যাপক মেজবাহকে শাস্তিস্বরূপ পদাবনতি দেওয়া হয়।

/এসএসএইচ/