টানা ৫ ঘণ্টার বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের নিচতলা। এতে বেশ বিপাকেই পড়েছেন হলের গণরুমে অবস্থানরত নারী শিক্ষার্থীরা। হলের নিচতলার রুমগুলোতে পানি ঢুকেছে। ফলে নিচতলার ছাত্রীদের উপরতলার রুমগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করেছেন সিনিয়র শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও কিছু শিক্ষার্থী নিজেদের পরিচিতদের রুমে অবস্থান নিয়েছেন। তাছাড়া হলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তির মাত্রা আরও বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে হলের নিচতলায় পানি উঠে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে শিক্ষার্থীদের এ সীমাহীন দুর্ভোগের দিনও শিক্ষার্থীদের পাশে পাওয়া যায়নি হল প্রশাসনকে।

এদিকে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়ে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃষ্টি পড়া অব্যাহত রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনেক এলাকাই পানিতে তলিয়ে গেছে। ভিসি চত্বর থেকে নীলক্ষেত রোড, শাহনেওয়াজ হোস্টেল, নিউমার্কেট এলাকা হাঁটু সমান এবং স্থান ভেদে কোমর পর্যন্ত পানি লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে, কুয়েত মৈত্রী হল তুলনামূলক নিচু অবস্থানে হওয়ায় বেশি দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা জানান, রাত ৯টার পর থেকে হলের অভ্যন্তরে পানির প্রবেশ শুরু হয়। হলগেটে হাঁটু সমান পানি জমেছে। পরবর্তীতে রাত ১১টায় হলের নিচতলার গেস্টরুমগুলোতে পানি প্রবেশ করতে থাকে। এসময় হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে উপরের তলায় বন্ধু বা সিনিয়রদের রুমে অবস্থান নেন। হলের দোকানে পানি উঠে ফ্রিজ ব্লাস্ট হয়ে গেলে হলের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলেও জানান একজন শিক্ষার্থী। 

ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, আমাদের এমন জরুরি অবস্থাকে মাথায় রেখে কোনো পূর্ব প্রস্তুতি কেন নেয়নি প্রশাসন? এ রাতে মেয়েগুলো তাদের জিনিসপত্রসহ কোথায় যাবে? সন্ধ্যা থেকে যখন পানি বাড়তে শুরু করে তখনও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। রাত ১১টার দিকে রুমে পানি প্রবেশ করে। এখন আমরা উপরের তলায় অবস্থান করছি।

ওয়াজিহা জাহান জুঁই নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টে বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কুয়েত মৈত্রী হলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে নিচতলা ডুবে গেছে। পানি সিঁড়ির নিচ পর্যন্ত চলে এসেছে। গণরুমে পানি ঢুকে গেছে। হলের মুদি দোকানের ফ্রিজে পানি ঢুকে ব্লাস্ট হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এসময় তিনি গণরুমের শিক্ষার্থীদের তার নিজের রুমে আসার অনুরোধ করেন।

সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের হাউজ টিউটর খালেদা খাতুনকে ফোন দেওয়া হলে এ বিষয়ে করা প্রশ্ন শুনেই ফোন কেটে দেন এবং পরবর্তীতে ফোন দেওয়া হলেও আর রিসিভ করেননি তিনি। এসময় হল প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. নাজমুন নাহারকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনিও রিসিভ করেননি।

/এফকে/