ইকবাল মনোয়ার

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য এএফএম আব্দুল মঈনের বক্তব্য নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন করায় ইকবাল মনোয়ার নামে এক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সাময়িক বহিষ্কার হওয়া ইকবাল মনোয়ার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) অর্থ সম্পাদক। তিনি দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুবি প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। 

বুধবার (২ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ইকবাল মনোয়ারকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। 

আদেশে বলা হয়, গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে উপাচার্য এএফএম আবদুল মঈনের বক্তব্যকে বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সুপারিশে ২ আগস্ট অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সভায় অনুমোদিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।

>>>কুবি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় ডুজার উদ্বেগ

এর আগে একই দিন সন্ধ্যায় উপাচার্যের বক্তব্য আংশিক প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করার অভিযোগ তুলে ইকবাল মনোয়ারকে বহিষ্কারের জন্য মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী ইকবালকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। 

জানা গেছে, গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য এএফএম আবদুল মঈন। সেখানে বক্তব্য দেন তিনি। তার বক্তব্য নিয়ে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার অনলাইনে ‘দুর্নীতি হচ্ছে তাই বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে : কুবি উপাচার্য’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। 

সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ‘উপাচার্য বলেন- অনেকেই বলে দেশে দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন হচ্ছে না। কিন্তু আমি বলব উল্টো কথা। দেশে দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নতি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন কথা বলতে পারেন। যে ঘুষ খায়, সে পদ্মার পাড়ে যায় ইলিশ খেতে। এতে পদ্মাপাড়ের গরিব মানুষেরা ধনী হচ্ছে। দুর্নীতি এভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখে। তাই অর্থনীতিবিদগণ দুর্নীতি নিয়ে কখনো কোনো বিরূপ মন্তব্য করে না। তবে যারা পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়ে কাজ করে তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে থাকে। নৈতিকতার জায়গায়ও এটি প্রশ্নবিদ্ধ। তবে অর্থনীতির জায়গা থেকে যদি বলি, দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাধা নয়।’

>>>কুবি প্রশাসনের ক্ষমতার অপব্যবহারেই সাংবাদিককে বহিষ্কার : জবিসাস

এ বিষয়ে বহিষ্কার হওয়া ইকবাল মনোয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপাচার্য মহোদয় যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন আমি সেই বক্তব্য হুবহু তুলে ধরেছি। আমার কাছে এর প্রমাণ রয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এএফএম আবদুল মঈনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

আরিফ আজগর/আরএআর