পাতাশূন্য গাছে ক্যাসিয়া রেনিজেরা ফুল সহজেই মানুষের মন কেড়ে নেয়

বসন্তের অবগাহনে পুরোনো জড়তা ফেলে নব পল্লবে সবুজ হয়ে উঠছে চারপাশ। যেন মরা গাছ ফিরে পেয়েছে প্রাণ। নতুন পাতা, নতুন ফুলে নতুনভাবে সেজেছে প্রকৃতি। ঋতু বসন্তের ক্রান্তিলগ্নে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সেজেছে এক অপরূপ ও নান্দনিক সৌন্দর্যে।

আর এ সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ক্যাসিয়া রেনিজেরা। ভিনদেশি এ ফুল যেন সৌন্দর্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে ক্যাম্পাসের।

মন মাতানো ক্যাসিয়া রেনিজেরা ফুলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রকৃতি পেয়েছে নতুন রূপ, নতুন প্রাণ। প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল মাসে ক্যাসিয়া রেনিজেরা গাছে ফুল ফোটে। বৈচিত্র্যময় এই ক্যাসিয়া রেনিজেরা ফুল। পাতাশূন্য গাছে ফুলগুলো সহজেই মানুষের মন কেড়ে নেয়।

জাবি ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণ ক্যাসিয়া রেনিজেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে, পুরাতন কলা ভবনের ভেতরে, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে, জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সামনে কয়েকটি ক্যাসিয়া রেনিজারার গাছ দেখা যায়।

ক্যাসিয়া রেনিজেরা আমাদের দেশীয় ফুল নয়, এটি মূলত জাপানি ফুল। জানা যায়, ২০০০ সালে ড. এ আর খান সর্বপ্রথম ক্যাসিয়া রেনিজেরা বীজ সংগ্রহ করে, চারা উৎপাদন করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে রোপণ করেন। ক্যাসিয়া রেনিজেরা ফুল ও বীজ অনেকটা সিম আকৃতির লম্বা দণ্ডের মতো। ফুলের ভেতর গোলাকৃতির বীজ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে ভিনদেশি এই ফুল

ক্যাসিয়া রেনিজেরার বৈজ্ঞানিক নাম হলো বার্মিজ পিংক ক্যাসিয়া। ফুল গাছের উচ্চতা প্রায় ১০ মিটার হয়ে থাকে। মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই ফুল ধরতে শুরু করে। বর্ষা মৌসুমছাড়া প্রায় প্রতিটি সময়েই ক্যাসিয়া গাছ থাকে পাতাশূন্য। দৃষ্টিনন্দন ক্যাসিয়া প্রজাপতির ৪০ প্রকার গুল্ম ও বৃক্ষজাত রয়েছে। এর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশে মিলিয়ে ১৫টি প্রজাতির দেখা পাওয়া যায়।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের মার্চ মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীশূন্য ফাঁকা ক্যাম্পাসে প্রকৃতি পেয়েছে তার আপন রুপ। ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এই ফুল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গাজী মোশারফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ক্যাসিয়া রেনিজারা আমাদের দেশি কোনো ফুলগাছ নয়। ক্যাসিয়া দেখতে চেরি ফুলের মতো হলেও এর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই ফুল ফোটার সময় গাছের সব পাতা ঝরে যায়। তখন এক অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়।’

এমএসআর