ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের লেখা ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’ বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ‘ইতিহাস বিকৃতির’ অভিযোগ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রলীগ।
 
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান  সৈকত উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়ে এ স্মারকলিপি দেন।
 
ছাত্রলীগের স্মারকলিপিতে বলা হয়, ড. ইমতিয়াজ আহমেদ তার লেখা বইয়ে উল্লেখ করেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ মার্চের ভাষণ শেষে ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছেন; আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরিচালিত গণহত্যাকে ‘গণহত্যা’ বলা যাবে না এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়েও ড. ইমতিয়াজ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

‘ড. ইমতিয়াজ জাতির পিতার দীর্ঘ সংগ্রাম, ৭ মার্চের ভাষণ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের দ্বারা সংঘটিত একাত্তরের গণহত্যা ইত্যাদি নিয়ে বেশ কিছু মিথ্যা ও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত জাতীয় ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো মন্তব্য করেছেন, যা একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।’
 
অধ্যাপক ইমতিয়াজের অপরাধের বর্ণনা দিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়, একাত্তরের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক বক্তৃতার সমাপ্তিতে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’র সাথে ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছেন বলে দাবি করেছেন ড. ইমতিয়াজ। এছাড়াও তখনকার পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অধিবাসীদের মধ্যে বিয়ে হতো, দুই অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক অনেক মিল ছিল, উর্দুর সঙ্গে বাংলা ও পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা ছিল। এছাড়া দুই অংশের অধিবাসীদের মধ্যেও নৃতাত্ত্বিক দিক থেকে অনেক মিল ছিল। এধরনের উদ্ভট দাবিও তিনি তার বইয়ে করেছেন; কখনো নিজের বরাতে, কখনো অন্যের মুখে শুনেছেন বলে দাবি করে লিখেছেন।
 
‘উল্লেখিত বিষয়গুলো মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে চূড়ান্তভাবে মীমাংসিত হয়েছে। জাতির পিতার অবদানকে অবমূল্যায়ন কিংবা স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের শামিল বলে মনে করে ও তীব্র ধিক্কার জানায় এবং এধরনের অপচেষ্টার পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে এমন সন্দেহ পোষণের অবকাশ রয়েছে বলেও মনে করে।’
 
স্মারকলিপিতে অনূর্ধ্ব ১৫ দিনের মধ্যে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কার্যকারণ উদ্ঘাটন ও প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানানো হয়। এছাড়া অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করারও দাবি জানানো হয়।

এইচআর/এফকে