চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ সময় সাংবাদিকদেরও হেনস্তা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় অবস্থান নেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। এরপর সাড়ে ১০টায় ছাত্রলীগের ২ উপগ্রুপ বাংলার মুখ এবং ভিএক্সের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের বাধা দেন।  এ সময় ব্যানার-ফেস্টুন কেড়ে নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের চড় থাপ্পড় মারেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় শহীদ এলাকায় বাধার মুখে ছত্রভঙ্গ হওয়ার পর আন্দোলনকারীরা পরে জিরো পয়েন্টে (স্মরণ চত্বর) এসে অবস্থান নেন। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারজান আকতার, আরটিভির ফটো সাংবাদিক এমরাউল কায়েস মিঠুসহ বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে হেনস্তার শিকার হন।

এ বিষয়ে দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারজান আকতার বলেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা যখন আন্দোলনকারীদের বাধা দিচ্ছিল তখন পেশাগত দায়িত্ব হিসবে তার ফুটেজ নিচ্ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের ভিএক্স গ্রুপের নেতাকর্মীরা এসে আমাকে আটকায় এবং ভিডিও ডিলিট করার জন্য জোর করতে থাকে। আমি ডিলিট করতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে নিরাপত্তাজনিত হুমকি দেয়। 

আন্দোলনকারী চারুকলার ১৮-১৯ সেশনের ছাত্রী পায়েল দে বলেন, আজ আমাদের আন্দোলনের শততম দিন। বিগত দিনের মতো আজকেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছিলাম। হঠাৎ করে একদল লোক এসে আমাদের থেকে ব্যানার, ফেস্টুন কেড়ে নেয় এবং আমাদের আন্দোলন বন্ধের জন্য হুমকি দিয়ে শহীদ মিনার থেকে বের করে দেয়। আমি মনে করি তারা প্রশাসনের মদদে এটা করেছে। আজকে সেই শিক্ষক-প্রশাসন কোথায় যারা বলে শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তানের মতো? আজকে আমরা লাঞ্ছিত, মার খাচ্ছি তারপরও প্রশাসনের কোনো ধরনের সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেই।

আন্দোলনে বাধা দেওয়ার বিষয়ে চবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ভিএক্স গ্রুপের নেতা মারুফ আহমেদ বলেন, চারুকলার আন্দোলনে আমাদের কিছু ছেলে অংশগ্রহণ করেছিল। আমরা তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য ওখানে গিয়েছিলাম। আমাদের ছেলেদের বাইরে আমরা কাউকে কোনো প্রকার বাধা দেইনি। 

সাংবাদিক হেনস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সাংবাদিককে প্রথমে সাধারণ শিক্ষার্থী মনে করেছিলাম। তাই ভিডিও ডিলিট করতে বলি। কিন্তু তিনি যখন সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছেন তখন আমরা আর কিছু বলিনি।

চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে আমি অবগত নই। যদি ছাত্রলীগের পরিচয় ব্যবহার করে কেউ এ কাজ করে থাকে তবে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছেও বিচারের দাবি জানাবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, আমি বায়োলজি ফ্যাকাল্টিতে একটি মিটিংয়ে আছি। এ ধরনের কোনো কিছু শুনিনি। কেউ কোনো অভিযোগও দেয়নি। আমি খবর নিচ্ছি।

আরএআর