ইবিতে এবার অতিথি পাখির আগমন নিয়ে শঙ্কা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) লেকে প্রতি বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। এসব পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় পুরো ক্যাম্পাস। তবে এ বছর এখনও দেখা মেলেনি পাখির। ফলে অতিথি পাখির আগমন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে হিমালয়ের উত্তরে সাইবেরিয়া অঞ্চলে নামে হাড় কাঁপানো শীত। এ শীত সহ্য করতে না পেরে তুলনামূলক কম শীত অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে পাখিরা। উষ্ণতার খোঁজে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে পাড়ি জমায় তারা। গত কয়েক বছর ধরে শীত হলেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে পাখিরা এসে বসবাস শুরু করে। এদের মধ্যে অধিকাংশ থাকে হাঁসজাতীয় পাখি। তবে গত বছরগুলোতে ডিসেম্বর মাস নাগাদ অতিথি পাখির দেখা মিললেও এ বছর এখনো কোনো পাখি চোখে না পড়ায় এদের আগামন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৭ কোটি টাকা মেগা প্রকল্পের আওতায় লেকের পাশে ১০তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণাধীন ভবনে ব্যবহার করা হচ্ছে উন্নত মেশিন। ফলে সবসময় নির্মাণ শ্রমিকদের উপস্থিতি, উচ্চ শব্দের সৃষ্টি এবং লেক এলাকায় বড় বড় বৃক্ষ নিধনের কারণে পাখিদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, এ বছর হয়তো লেকে দেখা মিলবে না এসব পাখির।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদরা বলছেন, কনস্ট্রাকশনের কাজ শেষে যদি লেকটিকে কৃত্রিম করা হয় তাহলে কয়েক যুগেও লেকে এসব পাখিদের দেখা মেলা ভার হয়ে দাঁড়াবে। ঋতু বৈচিত্র্যে প্রকৃতিতে শীত দেরিতে আগমন এবং অতিথি পাখি শিকারের কারণে পুরো দেশে এদের সংখ্যা কমেছে। আগে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আসলেও এখন কয়েক প্রকারের দেখা মেলে। অতিথি পাখিরা নির্জনে থাকতে পছন্দ করে। ঘন বসতি ও বৃক্ষনিধনের কারণে দেশে আসছে না পাখিরা। দ্রুত অতিথি পাখি সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে তাদের আর দেখা মিলবে না।
এমন খবরে মন খারাপ শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহাদ বলেন, পাখিদের আগমনে ক্যাম্পাসে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। আমরাও পাখিদের কলকাকলি উপভোগ করি। এ বছর তাদের মিস করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইনজামুল হক বলেন, কনস্ট্রাকশনের কাজ চলমান এবং লেকের আশেপাশের এলাকায় বৃক্ষ নিধনের কারণে অতিথি পাখিদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফলে এ বছর অতিথি পাখির হয়তো ক্যাম্পাসে দেখা মিলবে না। এসব পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায়ও অবদান রাখে।
রাকিব হোসেন/আরকে