আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশকে (জিইউবি) একটি উচ্চ মানসম্মত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এই সময়ের মধ্যে গ্রিন ইউনিভার্সিটিকে দেশের শীর্ষ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ।

উচ্চ মানসম্মত ও প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে টুগেদারনেস ফর হাই পারফরম্যান্স এট জিইউবি নামে দুই দিনের এক কর্মশালায় এ কথা বলা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করছেন।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর টিচিং অ্যান্ড লার্নিংয়ের সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে জিইউবির স্থায়ী ক্যাম্পাসে এই কর্মশালা শুরু হয়। যা রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত চলবে।

কর্মশালায় জিইউবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির সেশন পরিচালনা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রিন ইউনিভার্সিটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে উচ্চ দক্ষতা সম্পূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্যে প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক কি কি বিষয়ে কাজ করতে হবে কর্মশালায় সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করছি।

তিনি বলেন, এর মধ্যে তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে আমরা আলোচনা করছি। প্রথমত, ২০৩০ সালে গ্রিন ইউনিভার্সিটিকে কোথায় দেখতে চাই। দ্বিতীয়ত, উচ্চ দক্ষতা সম্পূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানের কি কি গুণ থাকে ও সর্বশেষ বিষয়টি হলো উচ্চ দক্ষতা সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলতে হলে এখানে কাজ করা লোকজনের কি কি বিশেষত্ব থাকা দরকার। 

২০৩০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়কে কোথায় নিয়ে যেতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে আমাদের আরও কয়েকটি বিভাগ চলে আসবে। আমরা চাই এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান এমন পর্যায়ে চলে যাক, যাতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে ভর্তি হতে হয়।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, প্রশাসন এক হাজার শিক্ষার্থী নিতে চাইলে যেন ১০ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালো স্থানে নেওয়ার জন্য শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ভেতরে যেন আত্মতৃপ্তি ও প্রতিযোগিতা থাকে। সেটি আমরা দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা জিইউবিকে দেশের সেরা পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নিয়ে যেতে চাই। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

কর্মশালায় জিইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে সম্মিলিত দক্ষ নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, কার্যকর এবং দক্ষ একাডেমিক ও প্রশাসনিক নেতৃত্বের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই গ্রিন ইউনিভার্সিটিকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করতে পারে। এ ব্যাপারে সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বক্তব্যের পরে কর্মশালায় উপস্থিত সবাইকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে সবার মধ্যে বন্ধন ও একাগ্রতা তৈরি করার জন্য তারা আজ একত্রিত হয়েছেন বলে জানান। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ ব্যক্তি থেকে শুরু করে শিক্ষক-কর্মকর্তা এমনকি কর্মচারীরাও নিজের কাজ, দক্ষতা ও আচরণের মাধ্যমে গ্রিন ইউনিভার্সিটির মূল্যবোধ তুলে ধরবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চ মানসম্মত প্রতিষ্ঠানে দাঁড় করাতে সদা সচেষ্ট থাকবে।

এ সময় তারা ২০২০ সালের মার্চে করোনাকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরপরই সব বাধা ও প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা করতে গ্রিন ইউনিভার্সিটির উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।

জিইউবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফায়জুর রহমান, বিজনেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম আহমেদ ফারুকী, ডিজটিংগুইজড অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র সূত্রধর, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাইফুল ইসলাম, সিইটিএল ডিরেক্টর ও ইইই বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. এএসএম শিহাবুদ্দিনসহ বিভাগীয় চেয়ারপার্সন, শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এমএসি/ওএফ