শিক্ষার্থী হয়রানি : ঢাবির জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি
রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে এক ছাত্রকে পুলিশে দিয়ে ‘হয়রানির’ দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো।
রোববার (২১ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ’ ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থী নির্যাতনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবি জানান ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শিমুল কুম্ভকার বলেন, দেশ ভয়াবহ ফ্যাসিবাদে ডুবে আছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যে একটা দলের বাইরে কেউ কোনো কথা বলতে পারবে না, করলেই সে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি। সরকারের পোষা সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নিয়ন্ত্রণ করছে। ছাত্রলীগের তৈরি করা সন্ত্রাসী কাঠামোর মধ্য দিয়ে গিয়ে ছাত্ররা সন্ত্রাসী হয়ে ওঠে। এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় আমরা কখনো চাই না।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীকে থানায় দিল ঢাবি প্রশাসন, ছেড়ে দিল পুলিশ
হল প্রাধ্যক্ষকে দলকানা আখ্যায়িত করে শিমুল বলেন, হল প্রাধ্যক্ষ যেখানে অভিভাবক হওয়ার কথা, সেখানে জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ তার ছাত্রকে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গিবাদে সংশ্লিষ্টতার কথা বলে পুলিশে সোপর্দ করলেন। কিন্তু পরে পুলিশ বলল, ওই অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাহলে প্রাধ্যক্ষ কিসের ভিত্তিতে এটা করলেন? দলকানা এই প্রাধ্যক্ষকে অপসারণ করতে হবে। মেফতাহুল মারুফকে হেনস্তা করা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিচার করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রাজীব কান্তি রায় বলেন, জিয়া হলের ঘটনাই প্রথম ঘটনা নয়, অন্যান্য হলেও এমন ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে। কিছু প্রকাশিত হচ্ছে, বেশির ভাগই আড়ালে থেকে যাচ্ছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের বাধ্য হয়ে কথিত অবৈধ ছাত্র হিসেবে গণরুমে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। গণরুম বিলুপ্ত করে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আরাফাত সাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অর্থ সম্পাদক আরমানুল হক ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য জাবির আহমেদ বক্তব্য দেন।
সহপাঠীদের মেসেঞ্জার গ্রুপে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেফতাহুল মারুফের এক বক্তব্যকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বিল্লাল। ভুক্তভোগীর দাবি, হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্তর কথায় তাকে থানায় দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ মামলার করার মতো ‘পর্যাপ্ত উপাদান’ না পাওয়ায়’ শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থীর মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এইচআর/এমএ