রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার (প্রক্সি) সময় ধরা পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষার্থী। তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দিয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আটক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে রাজশাহী বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যদি অভিযোগ দেওয়া হয় তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী।

আটক দুই শিক্ষার্থী হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এখলাসুর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মেহজাবীন। এখলাসুর ভর্তি পরীক্ষার রোল ১৭২২৮-এর পরীক্ষার্থী লিমনের হয়ে ও ৬২৮২৮ রোলের পরীক্ষার্থী মোসা. ইশরাত জাহানের হয়ে জান্নাতুল মেহজাবিন পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

তাদের মধ্যে জান্নাতুল মেহজাবিনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মেহজাবিন এর আগেও পরীক্ষায় এ ধরনের জালিয়াতি করেছেন বলে আদালতকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ সময় তার সেলফোন তল্লাশি করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৫১ টাকা দেখতে পান তারা। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায়ও প্রক্সি দিয়েছিলেন জান্নাতুল মেহজাবিন। প্রক্সি দিয়ে তিনি তিন প্রার্থীকে পাস করিয়েছিলেন।

এখলাসুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে। তৎকালীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানীর অনুসারী ছিলেন তিনি। তাকে এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আটক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি সংবাদ মাধ্যমে জেনেছি তবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি এবং কেউ অভিযোগও দেয়নি। যদি অভিযোগ দেওয়া হয় এরপর অভিযোগের ধরন দেখে আমরা ব্যবস্থা নেব। এর আগে অন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।

সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. দেবপ্রসাদ দাঁ বলেন, এ ঘটনায় আমরা ভীষণভাবে কষ্ট পেয়েছি। আমরা তাদের এমন শিক্ষা দেয়নি। আমরা খুবই মর্মাহত হয়েছি। আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে চাইব না আমার বিশ্ববিদ্যালয়কে কেউ কলঙ্কিত করুক। দারিদ্র্যতা থাকলেও নিজে শ্রম দিয়ে সে সৎ পথে ভালো কিছু করতে পারত। তবে যে অপকর্ম সে করেছে তার জন্য সে শাস্তি পেয়েছে এবং পাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোক প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান কিছুই জানেন না বলে ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।

এইচআর/এসকেডি