নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়ার সাহাপাড়ায় ঘরবাড়ি, দোকান, মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট-অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন রাজনীতি ও সামাজিক সংগঠন।

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে পৃথক পৃথকভাবে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, জাগো হিন্দু পরিষদ এবং ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ব্যানারে এসব বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় বক্তারা, দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে বিচারহীনতার কারণেই এসব সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে বলে মন্তব্য করেন তারা।

সমাবেশে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আমাদের সোনার বাংলাদেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। কিন্তু আমরা মানুষ হিসেবে কোথায় নিপতিত হচ্ছি তা নড়াইলের ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। শুধু নড়াইলের ঘটনা না, ২০১২ সালে রামুতে যে ঘটনা ঘটেছিল তার বিচার আজও হয়নি। সে বিচার যদি সঠিকভাবে হতো তাহলে আজ বাংলাদেশে একটার পর একটা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটত না। এই বিচার না হওয়াটাই আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সহিংসতা রুখতে সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোপুরি ব্যর্থ।

 

এসময় তিনি সবাইকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করার আহ্বান জানান৷

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, আমরা এ বাংলাদেশকে চিনতে পারছি না। এক অচেনা বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধের বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধের এক বাংলাদেশ এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি।

বাংলাদেশ একটি প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছে। প্রত্যেকটি ঘটনায় দেখা যাচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে ঘটনা ঘটে। তার মানে হচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনের মধ্যেও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে পরেছে এবং তারা তাতে আক্রান্ত হয়ে গেছেন।

এদিকে জাগো হিন্দু পরিষদের মানববন্ধন থেকে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিটি ঘটনা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়।

এছাড়া একইসময়ে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা। এসময় তারা প্রত্যেক ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবি করেন।

এইচআর/আইএসএইচ