তালা ভেঙে আবারও হলের ভেতর অবস্থান নিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটার দিকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে প্রবেশ করেন তারা। 

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে মিছিল বের করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি মেয়েদের হলগুলো অতিক্রম করে বঙ্গমাতা হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছে। এরপর আমরা মিছিল নিয়ে ফজিলাতুন্নেছা হলে যাব। এই দুই হলেই ছাত্রীরা অবস্থান করবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেহেতু আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ সেকারণে আমরা আর হল ত্যাগ করছি না।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ ছেড়ে দিতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান করেন সংশ্লিষ্ট হল প্রশাসন। তবে হল প্রশাসনের এমন আহ্বানে সাড়া না দিয়ে হলেই অবস্থান করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া যেসব হলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছিলেন না এমন অন্তত দুটো হলের তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করছি।

হল ছাড়ার নির্দেশের পর শিক্ষার্থীদের এমন সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবছি, সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবকিছু অবহিত আছে। 

উল্লেখ্য, ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে স্থানীয়রা। এ হামলায় অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী ও ৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয়। এর মধ্যে অন্তত ১১ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের এমন সংঘর্ষে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।

হামলা ও সংঘর্ষের পর স্থানীয় মেসগুলোতে অবস্থান করতে ‘নিরাপত্তার অভাব’দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তবে সরকারের নির্দেশনা ছাড়া হল খোলা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপরই সবগুলো আবাসিক হলের তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। তবে পরবর্তীতে আবারও কয়েকটি হলে তালা ঝুলিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট হল প্রশাসন।

আলকামা/এসপি