ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিভাগটির ৬ষ্ঠ ব্যাচের ওই ছাত্রী। এছাড়া বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ওই শিক্ষার্থীর প্রতি বৈষম্য করার অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, গত ৩১ মার্চ ওই বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৫ এপ্রিল) সিলেকশন বোর্ড বসে। সেখানে প্রভাষক পদের বিপরীতে ৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ওই ছাত্রীসহ ৫ জন উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে জাহাঙ্গীর আলম ও সুমাইয়া সিদ্দিকা নামে ২ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। সুপারিশ মঙ্গলবার সিন্ডিকেটের সভায় তোলা হলে ওই ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তা স্থগিত করা হয়।

উপাচার্যকে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৮ সালের শিক্ষক নিয়োগের আগে অধ্যাপক আকরাম আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। সে সময় রাজি না হওয়ায় আমাকে ওই নিয়োগ থেকে বাদ দিয়ে আমার সমমান রেজাল্টধারী দক্ষিণাঞ্চলের এক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এবার ২০২২ সালে আবারও শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করি। এই ভেবে যেহেতু তিনি (অধ্যাপক আকরাম) আমার শিক্ষক ছিলেন এবং এখন সবঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু বিবিএ ও এমবিএ দুটোতেই প্রথম হওয়া সত্বেও এবারও আমাকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তাই আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাইছি। অভিযোগের অনুলিপি সব সিন্ডিকেট সদ্যস্যদেরও দেওয়া হয়েছে।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, যৌথভাবে বিবিএ এবং এমবিএ দু‌টো‌তেই ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলেন অভিযোগকারী এই ছাত্রী এবং তার ব্যাচের আরেকজন শিক্ষার্থী। পরে ২০১৮ সালে ওই শিক্ষার্থী বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন বলেন, ‘যে দুটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা পড়লে দেখতে পাবেন, এটা আসলে নির্যাতনের অভিযোগ নয়, এটা চাকরি না পাওয়ার অভিযোগ। মঙ্গলবার যদি তার সিলেকশন হত, তাহলে আজকে এ অভিযোগ করত না। ২০১৯ সালের অভিযোগ এখন কেন?’

তিনি আরও বলেন, ‘সে যখন অভিযোগ করে আমি তখন বিভাগের চেয়ারম্যানও ছিলাম না এবং বোর্ড মেম্বারও ছিলাম না। আমি কীভাবে তাকে চাকরি দেব? এবার আমি চেয়ারম্যান এবং বোর্ড মেম্বার ছিলাম। সেই বোর্ডে প্রো-ভিসিসহ (শিক্ষা) আরও চারজন মেম্বার ছিল। সেখানে টপ রেজাল্টধারীদের সিলেকশন করা হয়েছে।’

বিবিএ ও এমবিএ- দুটোতেই প্রথম স্থান থাকার পরও ওই শিক্ষার্থীকে না নেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ডাবল ফার্স্ট তো সে শুধু একা নয়। ডাবল ফার্স্ট যৌথভাবে কয়েকজন থাকতে পারে। আমাদের পদ কম। একাধিক ডাবল ফার্স্টের মধ্যে সিলেকশন বোর্ড যাকে যোগ্য মনে করেছে, তাকে ওই পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।’

নিয়োগের বিষয়ৈ ভাইভা বোর্ডের প্রধান উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, নিয়োগে কোনো বৈষম্য হয়নি। সর্বোচ্চ সিজিপিএধারী দু’জনকে নিয়োগ বোর্ড সর্বম্মতিক্রমে নিয়োগের সুপারিশ করেছে। সুপারিশ করার পরদিন এসে একজন প্রার্থী অভিযোগটি করেছেন। সিন্ডিকেট সেজন্য নিয়োগটি আপাতত স্থগিত রেখেছে।’

এইচআর/জেডএস