এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন অ্যারোনেটিক্যাল ও নন-অ্যারোনেটিক্যাল চার্জ বকেয়া হলে যে ৬ শতাংশ (মাসিক) হারে সারচার্জ ধরা হয় সেটির বাতিল চায় দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলো। এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, এ চার্জ বছরে ৭২ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়, যা পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে প্রায় ৮৩ ভাগ বেশি। অবিলম্বে এ চার্জের অংশ বাতিল করে যৌক্তিক পর্যায়ে চার্জ নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী, সচিব, অর্থ সচিব ও বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) একটি চিঠি দেয় এয়ারলাইনসগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি)।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় চিঠিটি গ্রহণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।

চিঠিতে এওএবি’র মহাসচিব ও নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং, পার্কিং, রুট নেভিগেশনসহ বিভিন্ন খাতে বেবিচককে মাশুল (চার্জ) দেয় সব এয়ারলাইন্স। তবে বেবিচকের ধার্য করা এসব মাশুল নির্দিষ্ট সময়ে দিতে ব্যর্থ হলে এয়ারলাইন্সগুলোকে মাসে ৬ শতাংশ হারে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৭২ শতাংশ সারচার্জ দিতে হয়, যা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়ে ৮৩ শতাংশ বেশি। সারচার্জের হার অতিরিক্ত হওয়ায় এয়ারলাইন্সগুলো একবার বকেয়ার চক্রে পড়ে গেলে তাদের আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে না।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ভারতে সারচার্জ বার্ষিক ১২ থেকে ১৮ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ৮ শতাংশ, ওমানে ১০ শতাংশ ও পাকিস্তানে ২ শতাংশ। এ হিসাবে ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের সারচার্জ ৮৩ শতাংশ বেশি। সারচার্জসহ দেশীয় চার এয়ারলাইন্সের কাছে বেবিচকের পাওনা রয়েছে পাঁচ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল পাওনা হচ্ছে এক হাজার ১৭০ কোটি টাকা। বাকি চার হাজার ১৫২ কোটি টাকাই হচ্ছে মূলের ওপর আরোপিত সারচার্জ বাবদ। ফলে এয়ারলইন্সগুলো একবার বকেয়া সারচার্জের ঝুঁকিতে পড়ে গেলে সেখান থেকে ফিরে আসার আর উপায় থাকে না। পাশাপাশি দেনা পরিশোধ করতেও ব্যর্থ হয়। এর জ্বলন্ত উদাহরণ জিএমজি, ইউনাইটেড ও রিজেন্ট এয়ার বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। বেসরকারি এ এয়ারলাইন্সগুলো এ অবস্থা থেকে বের হয়ে পুনরায় আর চালু করতে পারেনি।

এ অবস্থায় এয়ারলাইন্সগুলোকে টিকিয়ে রাখতে বার্ষিক সারচার্জ ৭২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ নির্ধারণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এআর/এসএসএইচ