২২ জুলাইয়ের প্লেনের টিকিট যেন সোনার হরিণ
আগামী ২১ জুলাই (বুধবার) দেশজুড়ে উদযাপন করা হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করে ঢাকায় ফিরতে এক দিনের (২২ জুলাই) সুযোগ দিয়েছে সরকার। কারণ ২৩ জুলাই থেকে আবারও শুরু হবে কঠোর বিধিনিষেধ। তাই ২২ জুলাই দেশের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে আকাশপথে ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৯৫ ভাগ টিকিট বিক্রি শেষ করেছে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স। রোববার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যার মধ্যে শতভাগ টিকিট বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এবার ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে আশানুরূপ টিকিট বিক্রি হয়নি। অন্যান্য বছর ঈদে বাড়ি ফেরার টিকিটের জন্য হাহাকার লেগে থাকত। মাসখানেক আগেও টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ার নজির রয়েছে। যাত্রী চাহিদা বিবেচনা করে এয়ারলাইন্সগুলো অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করত। তবে এবার শিডিউল ফ্লাইটগুলোরই শতভাগ টিকিট বিক্রি হয়নি।
বিজ্ঞাপন
এর আগে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের কারণে ১৫ জুলাই রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে ২৩ জুলাই থেকে আবারও বিধিনিষেধ বহাল থাকায় ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। এক্ষেত্রে ২১ জুলাই ঈদুল আজহা শেষ করে ঢাকায় ফেরার জন্য মাত্র ১ দিন সুযোগ পাবে নগরবাসী।
বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স জানায়, ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলোয় ধারণক্ষমতার ৮০ থেকে ৯০ ভাগের মতো যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি ফ্লাইটই কিছু কিছু সিট ফাঁকা থাকছে। বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে ৩২টি ফ্লাইট চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউএস-বাংলা। এর মধ্যে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পাঁচটি, কক্সবাজারে দুটি, সৈয়দপুরে সাতটি, যশোরে ছয়টি, সিলেট-বরিশাল ও রাজশাহীতে চারটি করে ফ্লাইট রয়েছে। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে সৈয়দপুর, যশোর, বরিশাল ও রাজশাহী রুটে যাত্রী বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক জনসংযোগ (জিএম, পিআর) মো. কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২৩ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কারণে অনেকেই বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন। তাই যাত্রী সংখ্যা গত বছরগুলোর তুলনায় কম। যাদের একান্তই বাড়িফেরা প্রয়োজন শুধুমাত্র তারাই যাচ্ছেন। আর যেহেতু ঢাকায় ফেরার জন্য যাত্রীরা মাত্র একদিন সময় পাবেন তাই তারা তাড়াহুড়ো করে যাতায়াত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ২২ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকায় ফেরার টিকিট প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরই মধ্যে ৯৫ ভাগ আসনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন চট্টগ্রামে ছয়টি, সৈয়দপুরে ছয়টি, যশোরে ছয়টি, বরিশালে ছয়টি, সিলেটে তিনটি, রাজশাহীতে তিনটি ও কক্সবাজারে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে নভোএয়ার।
ফ্লাইটের যাত্রীদের বিষয়ে নভোএয়ারের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বিভাগের প্রধান মেজবাহ-উল-ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২২ জুলাই ঢাকায় ফেরার প্রায় সব ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শেষ। আর ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার ফ্লাইটগুলোয় গড়ে ৮৫ ভাগ টিকিট বিক্রি হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে আমরা আগের বছরগুলোয় যেমন যাত্রী পেতাম এবার তেমন পাচ্ছি না। ২২ জুলাই একদিনের মধ্যেই সবাইকে ফিরতে হবে শুনে অনেকেই আর বাড়ি ফিরছেন না। আমাদের অনেক যাত্রী আগে বাড়ি ফেরার টিকিট কেটে রাখলেও পরে তা ক্যান্সেল করেছেন।
ঈদে যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরাতে অভ্যন্তরীণ রুটে ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনটি, সৈয়দপুরে তিনটি, কক্সবাজারে দুটি, যশোরে দুটি, সিলেটে দুটি, রাজশাহীতে একটি ও বরিশালে একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে।
দুই বেসরকারি এয়ারলাইন্সের মতো বিমানও ঈদের আগের ফ্লাইটের সব টিকিট বিক্রি করতে পারেনি। তবে ফিরতি টিকিট বিক্রি শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
এআর/এসকেডি