হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘এয়ারপোর্ট ইমার্জেন্সি এক্সারসাইজ ২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ মহড়া প্রদর্শন করা হয়। এতে একটি বিমানে বোমা বা বোমা সদৃশ বস্তু নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং বোমা নিষ্ক্রিয় ও উদ্ধার করার প্রক্রিয়ার একটি কল্পিত দৃশ্যে দেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার প্রশিক্ষিত সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কোনো এয়ারক্রাফটে বোমা বা বোমা সদৃশ বস্তু পাওয়া গেলে যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং বোমা নিষ্ক্রিয় বা উদ্ধার করার প্রক্রিয়া অনুশীলন করা। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধি অনুযায়ী প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাইজ্যাক, অগ্নিনিরাপত্তা, বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা যাচাই ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি দুই বছর অন্তর এ ধরনের মহড়া আয়োজন করা হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মহড়ায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বেবিচক, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, এপিবিএন, ডিএমপি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, জাহান আরা হাসপাতাল, র‍্যাব, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এবং নভোএয়ারসহ বিভিন্ন সংস্থা একযোগে অংশ নিয়েছেন।

মহড়ার দৃশ্যে দেখা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে একটি বার্তা আসে, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে এয়ারক্রাফ্টে বোমাজাতীয় বস্তু রয়েছে। পরে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম এই বার্তা বিভিন্ন সংস্থাকে দ্রুত জানান। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি প্রতিরোধ প্রক্রিয়া শুরু করে।

বোমা উদ্ধার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বিভিন্ন সংস্থার প্রায় দুই শতাধিক প্রশিক্ষিত সদস্য অপারেশন পরিচালনা করেন। অল্পসময়ের মধ্যেই ওই এয়ারক্রাফট থেকে বোম ডিসপোজাল ইউনিট বোমা সদৃশ বস্তুটি উদ্ধার করে এবং নিষ্ক্রিয় করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। তিনি বলেন, এভসেক সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে আইসিএওর নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন ও মহড়া বাস্তবায়ন করে আসছেন। প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ এবং নিয়মিত মহড়া।

তিনি আরও বলেন, আইকাও-এর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে মহড়ার মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। আজকের মহড়ায় অল্পসময়ের মধ্যেই কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। সবাই সম্মিলিতভাবে দ্রুত কাজ করায় পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান অংশীজনদের প্রস্তুতি ও দক্ষতা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আজকের মহড়ায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি সংস্থার পারফরম্যান্স অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

মহড়ায় আরো উপস্থিত ছিলেন বেবিচক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনসহ বিভিন্ন অংশীজন।

আরএইচটি/জেডএস