ইউএস-বাংলার ঢাকা-জেদ্দা ফ্লাইট উদ্বোধন করলেন বিমানমন্ত্রী
পবিত্র নগরী মক্কার প্রবেশদ্বার জেদ্দায় আজ ১ আগস্ট থেকে সরাসরি ফ্লাইট শুরু করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-জেদ্দা ফ্লাইটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সপ্তাহের প্রতিদিন ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ দিয়ে সরাসরি ঢাকা থেকে জেদ্দায় ফ্লাইট পরিচালনা করবে ইউএস-বাংলা।
বিজ্ঞাপন
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ২০১৪ সালে আমি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উদ্বোধন করেছিলাম, আমিই আজ ঢাকা-জেদ্দা রুটের উদ্বোধন করছি, এটা আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আশা করছি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স তাদের বহর আরও বড় করবে এবং আন্তর্জাতিক রুট সম্প্রসারণ করে আরও এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ, ট্যুর অপারেটর, টিকিটিং এজেন্সি, এয়ারলাইন্স মালিকসহ খাত সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে নানা পরামর্শ দেন। এসময় তারা বিমানভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে বিমানবন্দরের নানা ধরনের ট্যাক্স, সিভিল এভিয়েশনের সারচার্জ, এভিয়েশ যন্ত্রাংশ আমদানির ট্যাক্স, জেটফুয়েলের অতিরিক্ত দাম উল্লেখ করে এসবের বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা যেসব বিষয়ে বলেছেন আশা করছি বেবিচক চেয়ারম্যান সেগুলো নোট করেছেন। পাশাপাশি আমি এও বলতে চাই, এই খাতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা দেশের বিমানবন্দরগুলোর উন্নয়নের কাজ করেছি, করে যাচ্ছি।
দেশের সব এয়ারলাইন্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফারুক খান বলেন, সাম্প্রতিককালে আন্দোলনের সময় দেশে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিটি এয়ারলাইন্স অপারেশন চালিয়েছে, যাত্রীদের সেবা দিয়েছে; এজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া বেবিচককেও ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করি আগামীতেও তারা এধরনের সেবা দিয়ে যাবেন।
অনুষ্ঠানে হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম মন্ত্রীকে হজের অতিরিক্ত বিমানভাড়া কমাতে একটি টেকনিক্যাল কমিটি করার পরামর্শ দেন। কমিটিতে এভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি, বেবিচক ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের রাখার প্রস্তাব দেন।
আরও পড়ুন
এবিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য জনগণকে উন্নত সেবা ও সঠিক মূল্যে সেবা দেওয়া। আমরা এভিয়েশন খাতকে এগিয়ে নিতে সবার সঙ্গে বসে আলোচনা করবো, তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। সঙ্গে যাত্রী সেবাও নিশ্চিত করবো। হাব সভাপতির প্রস্তাবের বিষয়ে আমি মন্ত্রীর (ধর্মমন্ত্রী) সঙ্গে কথা বলবো।
নতুন চালু হওয়া এই রুটে ঢাকা থেকে জেদ্দার ন্যূনতম ভাড়া ট্যাক্স ও সারচার্জসহ ওয়ানওয়ে ৫৩ হাজার ১৮৯ টাকা এবং রিটার্ন ভাড়া ৯০ হাজার ৭১৮ টাকা। এছাড়া জেদ্দা থেকে ঢাকার ওয়ানওয়ের ন্যূনতম ভাড়া ৭৯৩ সৌদি রিয়েল এবং রিটার্ন ভাড়া ১ হাজার ৪৮৬ সৌদি রিয়েল। ঢাকা থেকে যাত্রীরা জেদ্দায় ৩০ কেজি এবং জেদ্দা থেকে ঢাকায় ৫০ কেজি পর্যন্ত বিনা খরচে লাগেজ বহন করতে পারবে।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ওমরাহ হজ পালন করার সুপ্ত ইচ্ছাকে পূর্ণতা দিতেই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সরাসরি ঢাকা থেকে পবিত্রতম শহর জেদ্দায় ফ্লাইট শুরু করেছে। এছাড়া রেমিট্যান্স যোদ্ধারা যেন সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যেকোনো গন্তব্যে স্বল্পতম সময়ে গমণ করতে পারে সে ব্যাপারে যত্নশীল থাকবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে দুটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, নয়টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০সহ মোট ২৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সকল রুট ছাড়াও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দুবাই, শারজাহ আবুধাবি, মাস্কাট, দোহা, মালে, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, চেন্নাই ও কলকাতা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর সাদিকুর রহমান চৌধুরী, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এওএবি) সাধারণ সম্পাদক ও নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম, ইউএস-বাংলার এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লুৎফর রহমানসহ আটাব, টোয়াব ও হাবের নেতারা।
এআর/এসএম