এয়ার চায়নার পর এবার ঢাকা থেকে সরাসরি বেইজিং রুটে ফ্লাইট পরিচালনার ঘোষণা দিলো চীনের চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স।

সোমবার (১ জুলাই) রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-বেইজিং রুটে ফ্লাইট পরিচালনার ঘোষণা দেয় চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স।

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ভ্রমণের ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৫ জুলাই থেকে ঢাকা-বেইজিং সরাসরি ফ্লাইট চালু করছে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বেইজিংয়ের ডাশিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রুটে সপ্তাহে দুইটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে তারা।

এয়ারলাইন্সটি জানায়, প্রাথমিকভাবে প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও শনিবারে ঢাকা থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশে যাত্রা করবে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট। এর ফলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যোগাযোগ আরও সমৃদ্ধ হবে। যা দেশ দুইটির মানুষের মধ্যে সংযোগ ও বন্ধুত্ব মজবুতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

অত্যাধুনিক এয়ারবাস এ-৩২১ নিও এয়ারক্রাফট দ্বারা পরিচালিত নতুন রুটটি পরিচালিত হবে। এয়ারক্রাফটটিতে ১২টি বিজনেস ক্লাস ও ১৮৭টি ইকোনমি ক্লাসসহ মোট ১৯৯টি সিট রয়েছে।

ফ্লাইট চালুর ঘোষণার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান ও বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সিলেন্সি ইয়াও ওয়েন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, চীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হয়ে কাজ করছে চীন। 

পদ্মা সেতু নির্মাণে চীনের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক থেকে শুরু করে সবাই যখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, তখন প্রধানমন্ত্রীর নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছিল চীন। সংযোগের মাধ্যমেই উন্নয়ন আসে। আমরা সংযোগ স্থাপনে বিশ্বাস করি। চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও চীনা বিনিয়োগ আসবে।

মন্ত্রী বলেন, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইট ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে। যেহেতু চীনে প্রচুর পর্যটক রয়েছে, আমরা ভবিষ্যতে কক্সবাজার এবং কুনমিং বিমানবন্দরের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। অর্থনীতি চাঙা করতে মিয়ানমার, ভারত, চীন, নেপাল ও ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে চায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সিলেন্সিইয়াও ওয়েন তার বক্তব্যে ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট উদ্বোধনের জন্য চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সকে অভিনন্দন জানান। এই রুটটি বৃহত্তর সহযোগিতা, জনগণের মধ্যে সংযোগ এবং উভয় পক্ষের জন্য সমান লাভ বয়ে আনবে এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সুযোগ আরও প্রসারিত করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকা-বেইজিং সরাসরি ফ্লাইট চীন ও বাংলাদেশের জনগণকে ভ্রমণ ও সুযোগ গ্রহণে উৎসাহিত করবে বলেও মনে করেন তিনি।

চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের মহাব্যবস্থাপক জি কাংজিয়া বলেন, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইনস এভিয়েশন শিল্পে একটি শীর্ষস্থানীয় নাম, যা তার বিস্তৃত নেটওয়ার্ক এবং শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিশ্রুতির জন্য পরিচিত। এশিয়ার বৃহত্তম এয়ারলাইন্স হিসেবে, আমরা গর্বের সাথে প্রতিদিন তিন হাজারটিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করছি, যা যাত্রীদের বিশ্বজুড়ে ২০০টিরও বেশি গন্তব্যে সংযুক্ত করছে। গত বছর আমরা এক লাখ ২০ হাজারেরও বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে চীনে গিয়েছি। এই বছরের প্রথমার্ধে সংখ্যাটি ইতোমধ্যে ৪০ হাজারের কাছাকাছি। 

অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা উপভোগ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ১ জুলাই থেকে ঢাকা-বেইজিং রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে এয়ার চায়না।

এআর/কেএ