হঠাৎ ৫০ শতাংশের বেশি ভাড়া বাড়াল দুই এয়ারলাইন্স
চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। মাত্র চার মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রাম থেকে তিনটি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। সবশেষ ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করেছে ওমান এয়ার। ওমান এয়ারের ফ্লাইট বন্ধের পর দুটি এয়ারলাইন্স ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। এতে মধ্যপ্রাচ্যগামী যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে বেকায়দায়।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওমান এয়ারের শেষ ফ্লাইট ছেড়ে যায় গত ৮ মার্চ। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টায় ছেড়ে যায় তাদের ‘ডব্লিওওয়াই৩১৪’ ফ্লাইটটি। ২৭১ আসন ধারণ ক্ষমতার বিমানটিতে যাত্রী ছিল ২৪০ জন। ওই ফ্লাইটের পর চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে এয়ারলাইন্সটি।
বিজ্ঞাপন
ওমান এয়ারের ফ্লাইট বন্ধের খবরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাইট পরিচালনাকারী দুটি বিদেশি এয়ারলাইন্স টিকিট প্রতি ৫০ শতাংশের বেশি ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) চট্টগ্রাম জোনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘ওমান এয়ার ও জাজিরা এয়ার কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার পর ফ্লাই দুবাই ও এয়ার অ্যারাবিয়া ভাড়া অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে মধ্যপ্রাচ্যগামী যে টিকিট ৪০০ ডলারে কাটা যেত এখন সেই টিকিট কাটতে ৬০০ থেকে ৬৫০ ডলার লাগছে।’
টিকিটের দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে ফ্লাই দুবাইয়ের স্টেশন ম্যানেজার (চট্টগ্রাম) নাজিয়া আফরিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘টিকিটের দাম নিয়ে সেলস বিভাগ কাজ করে। এ বিষয়ে আপনি সেলস বিভাগের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’
পরে ফ্লাই দুবাইয়ের সেলস বিভাগের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার মারিয়াম সুলতানাকে একাধিকবার কল দিয়েও সংযুক্ত করা যায়নি। তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল ও ম্যাসেজ পাঠায় ঢাকা পোস্ট। এতেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে এয়ার অ্যারাবিয়ার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নম্বর নিয়ে চট্টগ্রামের সেলস বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ঢাকা পোস্ট। ওই নম্বরেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন
চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ব্যবহারকারী সৌদি প্রবাসী ছাদেকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের প্রবাসীদের বিরাট অংশের অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে। যারা চট্টগ্রাম থেকেই স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু একে একে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় প্রবাসীরা আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি চরম দুর্ভোগেও পড়তে হচ্ছে।’
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে চালু হলে অনেক বিদেশি এয়ারলাইন্স চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে। একে একে বেশির ভাগ এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দেয়।
চালু থাকা অবস্থায় যেসব বিদেশি ফ্লাইট বন্ধ হয়েছে সেগুলো হলো- থাই এয়ার, থাই স্মাইল এয়ার, কুয়েত এয়ার, ফুকেট এয়ার, মালিন্দো এয়ার, রোটানা এয়ার, হিমালয়ান এয়ার, রাস আল কাইমা (আরএকে) এয়ার, টাইগার এয়ারওয়েজ, সিল্ক এয়ার, ভারতভিত্তিক স্পাইসজেট বিমান ও কুয়েতভিত্তিক এয়ারলাইনস জাজিরা এয়ারওয়েজ।
সিভিল এভিয়েশন অথরিটি জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে এই এয়ারলাইন্সগুলো স্বল্প সময় ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। ব্যবসায়িক কারণেই তারা চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
এমজে