পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়াই প্লেনে উঠে গেল শিশু, শাহজালালে তোলপাড়
সোমবার মধ্যরাতে এক শিশুকে কেন্দ্র করে তোলপাড় সৃষ্টি হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। শিশুটি পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস না নিয়েই কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে সিটে বসে যায়। প্লেনটি উড্ডয়নের প্রস্তুতি নেওয়ার আগ মুহূর্তে জানা যায় শিশুটি এই ফ্লাইটের যাত্রী নয়। এমনকি তার পাসপোর্ট কিংবা বোর্ডিং পাসও নেই।
বিমানবন্দরে এমন ভূতুড়ে ঘটনায় কেবিন ক্রু ও যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে শিশুটিকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। তবে, পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়া একজন শিশু কীভাবে প্লেনে উঠে গেল- এ ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে কুয়েত এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটে।
বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট (কেইউ-২৮৪) উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেসময় ৮-৯ বছরের একটি ছেলে শিশু প্লেনের ভেতরে কোরিডোরে হাঁটাচলা করছিল। কেবিন ক্রু শিশুটিকে সিটে বসার পরামর্শ দেন। তখন শিশুটি একটি সিটে বসে পড়ে।
আরও পড়ুন >> ড্রিমলাইনার নিয়ে ‘ছেলেখেলা’, বুড়ো হবে অর্ধেক বয়সেই
একপর্যায়ে শিশুটি যেই সিটে বসেছিল পাশের সিটের যাত্রী শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলে। কিন্তু শিশুটি তার বাবা-মায়ের বিষয়ে কোনোকিছু বলতে পারেনি।
বিমানবন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি গোয়েন্দা সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানায়, পাশের সিটের যাত্রী বিষয়টি কেবিন ক্রুর নজরে আনলে কেবিন ক্রু তাকে বাবা-মার বিষয়ে জিজ্ঞেস করে। তবে শিশুটি উত্তর দিতে পারেনি। একপর্যায়ে কেবিন ক্রুরা হেড কাউন্ট করেন (যাত্রী সংখ্যা গণনা করা)। তখন একজন যাত্রী বেশি পাওয়া যায়। প্লেনের দরজা খুলে শিশুটিকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন - বাংলাদেশে চোখ ‘সুপার এগ্রেসিভ’ রিয়াদ এয়ারের
৮-১০ বছরের ছেলে শিশুটিকে সর্বশেষ বিমানবন্দর থানা পুলিশের হেফাজতে দিয়েছে এভসেক। বর্তমানে সে থানায় অবস্থান করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল হক মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তার বাবা-মা আসলে সিনিয়র অফিসারদের পরামর্শ নিয়ে শিশুটির বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এভসেকের পরিচালক উইং কমান্ডার মিরান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুটির বাবা-মার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা গোপালগঞ্জে থাকেন। তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
আরও পড়ুন : ৭ অক্টোবর শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
বিমানবন্দরে কর্মরত প্রত্যেক কর্মী ডিউটি পাস ব্যবহার করে চলাফেরা করে। বাকী যারা যাত্রী তারা পাসপোর্ট এবং বোর্ডিং পাস দিয়ে চলাফেরা করেন। এছাড়া বিমানবন্দরে ঢুকে ইমিগ্রেশনসহ প্রায় ৮/১০ টি ধাপ পেরিয়ে প্লেনে চড়তে হয়। কোনো ধাপেও শিশুটিকে না আটকানোর বিষয়টি নিরাপত্তাহীনতা বলে মন্তব্য করেছেন অনেক যাত্রী।
এ বিষয়ে ফোনে ও এসএমএসে চেষ্টা করেও বিমানবন্দরের মুখপাত্রের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া শিশুটি কোথা থেকে এল, বিমানবন্দরে কীভাবে প্রবেশ করল- সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে কিছু জানা যায়নি।
এআর/এমএসি/এমজে