অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট জনপ্রিয় করে তুলতে চার্জ কমানোর প্রস্তাব
অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো জনপ্রিয় করে তুলতে যাত্রী ভ্রমণের ক্ষেত্রে আবগারি শুল্ক, বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি, নিরাপত্তা ফি, এমবার্কেশন ফি ও মূসকসহ যাত্রী প্রতি ৭২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি)। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ জ্বালানির ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহারও চেয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাব জানায় সংগঠনটি।
বিজ্ঞাপন
প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এতে শুল্ক বিভাগের সদস্য মো. মাসুদ সাদেক, ভ্যাট নীতির সদস্য জাকিয়া সুলতানা ও আয়কর নীতির সদস্য সামস উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এওএবি প্রস্তাবনায় চার্টার্ড উড়োজাহাজ এবং হেলিকপ্টার সেবার সার্ভিসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ও মূসক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এ ধরনের সেবার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ মূসক আরোপিত হয়েছে। এছাড়া আরোপিত সব আমদানি শুল্ক, মূসক, আগাম কর ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ওপর আরোপিত মূসক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
এওএবি জানায়, মোটরযানে ব্যবহৃত ইঞ্জিন আমদানিতে সুনির্দিষ্ট এইচএস কোড নির্ধারণ করে আমদানি শুল্ক ৩ শতাংশ করা ও খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
বাস, ট্রাক ও লরির রেডিয়াল টায়ার সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর উল্লেখ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি তাদের বাজেট প্রস্তাবনায় জানিয়েছে, বর্তমানে এসব পণ্য আমদানিতে ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর ও ৫ শতাংশ অ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট (এটিভি) নির্ধারিত আছে। সেই সঙ্গে প্রতি কেজি রেডিয়াল টায়ারে ৩.৫০ ডলার ও নন-রেডিয়াল টায়ারে ৩ ডলার ট্যারিফ বিদ্যমান আছে। এই হার রেডিয়াল ও নন-রেডিয়াল উভয় ক্ষেত্রে ২ ডলার করার প্রস্তাব দিয়েছে পরিবহন সমিতি। এছাড়া আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ ও সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব জানিয়েছে সংগঠনটি।
অন্যদিকে হুইল রিম, হুইল নাট-বোল্ট গাড়ির টায়ারের রিমে ব্যবহৃত জেনুইন হুইল নাট-বোল্ট আমদানির ট্যারিফ ভ্যালু ২ ডলার থেকে কমিয়ে ১ ডলার করার জন্য ও ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ মোটর পার্টস ও টায়ার টিউব ব্যবসায়ী সমিতি।
সংগঠনটি আরও জানায়, বাস-ট্রাকে ব্যবহৃত হুইল রিমের আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য প্রতি কেজি ১.৫ ডলার। বর্তমানে এই পণ্যটির ওপর প্রতি কেজিতে ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ আছে ৪ ডলার। এই পণ্যের প্রকৃত ক্রয় মূল্যের ওপর ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ ও ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন তাদের প্রস্তাবে জানিয়েছে, কোম্পানির কর হার ৩৫ শতাংশ ও উৎসে আয়কর কর্তনের হার ৬ থেকে ৮ শতাংশ অনেক বেশি। তাই কোম্পানির কর হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, উৎসে আয়কর কর্তনের হার ২ শতাংশ করা এবং কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্কমুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
অন্যদিকে ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানির ওপর সর্বনিম্ন হারে শুল্ক নির্ধারণ, দেশীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত অটোমোবাইল পণ্যের ক্ষেত্রে বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা প্রদান, বাণিজ্যিক গাড়ির ওপর বিদ্যমান ১০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বামা)।
আরএম/কেএ