দুই বছর করোনার ধকল সামলে এবারই প্রথমবারের মতো স্বস্তিতে এবং কোন ধরণের বিধিনিষেধ ছাড়া আকাশপথে বাড়িফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকাবাসী। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটের ৩০ ভাগ ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ টিকিট বিক্রি শেষ হতে পারে বলে ধারণা এয়ারলাইন্সগুলোর।

এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, ঈদে শান্তিতে বাড়ি ফেরার জন্য ৫-৬ বছর ধরেই আকাশপথকে বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা। আগে ঈদের ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে যেতো। তবে গত দুই বছর লকডাউনের কারণে অনেকেই বাড়ি ফেরা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারেননি। এবার বাড়িফেরা নিয়ে কারো কোন শঙ্কা নেই। তাই আগামী সপ্তাহের মধ্যে সব টিকেট শেষ হবে বলে ধারণা তাদের।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ২ অথবা ৩ মে। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ২৯ এবং ৩০ এপ্রিলের টিকিটের।

এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, আকাশপথের যাতায়াতকারীদের অধিকাংশই একটু সচেতন বেশি, তারা আগেভাগেই ঢাকা ত্যাগ করতে চান। তাই অন্যান্য বার ঈদের ২ বা ১ দিন আগের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকলেও এবার ২৬ বা ২৭ রমজানে যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী ও বরিশাল রুটের টিকিট বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ঈদের ২য় দিন থেকে পরবর্তী ১০-১২ দিন ঢাকা থেকে কক্সবাজার ও সিলেট রুটের টিকিটের চাহিদা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানায়, তারা আরও একমাস আগ থেকেই ঈদের সময়ের টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন। এপ্রিলের ২৯ এবং ৩০ তারিখের রাজশাহী, যশোর ও সৈয়দপুর রুটে বিমানের টিকিটের চাহিদা বেশি। এছাড়াও ঈদের ২য় দিন থেকে পরবর্তী ৭ থেকে ১০ দিন কক্সবাজার ও সিলেটের টিকিটের চাহিদা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বরাবরের মতো স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ঈদেও আমাদের এই ধারা অব্যাহত থাকবে। অন্যান্যবারের মতো এবারো ঈদে আমরা যাত্রীদের অনেক সাড়া পাচ্ছি। ঢাকা থেকে বাড়িফেরা ও ঢাকা ফেরার টিকিটের বিক্রি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা থেকে বাড়িফেরার ২৮, ২৯ ও ৩০ এপ্রিলের টিকিটের চাহিদা বেশি। বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় ফেরার চাপ বেশি ৫ ও ৬ মে।

তিনি বলেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে বাড়িফেরার টিকিট সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে বরিশাল, রাজশাহী, সৈয়দপুর এবং যশোরের রুটে। ঈদের পর বেশ কয়েকদিন কক্সবাজারে যাওয়ার চাপও রয়েছে।

নভোএয়ারের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বিভাগের প্রধান মেজবাহ-উল-ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের সময় সব অভ্যন্তরীণ রুটেই টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে। তবে তুলনামূলক বরিশাল, রাজশাহী ও সৈয়দপুরের চাপটা বেশি। বেশিরভাগ যাত্রীই ২৮, ২৯ এবং ৩০ এপ্রিলের টিকিটের খোঁজ করছেন। আশা করছি বরাবরের মতো এবারো আকাশপথে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন।

এআর/আইএসএইচ