খামখেয়ালি আবহাওয়া, দুষ্প্রাপ্য হয়ে যাবে সাধের কফি!
এক কাপ কফিতেই দূর হয় সব ক্লান্তি। কিন্তু সেই সাধের কফি কি ভবিষ্যতে পাবেন? আর পেলেও তার দাম কি সাধ্যের মধ্যে থাকবে? তেমন আশঙ্কার কথাই বলছে নতুন একটি গবেষণা। তাতে বলা হয়েছে, উষ্ণায়নের ফলে ব্যাহত হতে পারে কফি, অ্যাভাকাডো ও কাজুবাদামের ফলন। আবহাওয়ার পরিবর্তনে বিশ্বজুড়ে ঋতুচক্রের বদল হচ্ছে। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা আরও বাড়লে স্বাভাবিকভাবে প্রভাব পড়বে চাষবাসে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জার্নাল প্লস ওয়ান-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে কফি, অ্যাভাকাডো ও কাজু চাষের অনুকূল জায়গা কমে যাবে। গবেষকরা বলছেন, জৈব-ভৌত পরিবেশের উপর নির্ভর করে কোন জায়গায় কোন ফসলের ফলন ভালো হবে। মাটির সঙ্গেও দরকারি অনুকূল আবহাওয়া। সুতরাং উষ্ণায়নের ফলে কমবে ফলনে।
বিজ্ঞাপন
গবেষকরা বলছেন, আবহাওয়া বদলের ফলে কমতে শুরু করেছে কফি চাষের অনুকূল অঞ্চল। পরিবর্তন হচ্ছে ওই সব অঞ্চলের মাটির বৈশিষ্ট্য। ২০৫০ সালের মধ্যে ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম এবং কলম্বিয়ার মতো কফি উৎপাদনকারী দেশগুলিতে ফলন ৫০ শতাংশ কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।
জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞানের গবেষণাপত্রে ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল রিসোর্সেসের গবেষকরা দাবি করেছেন, দূষণের তিনটি মডেলের ভিত্তিতে ১৪টি বিশ্বজনীন মডেলের আবহাওয়ার তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো দেশে যে শস্য উৎপাদিত হয় তার উপরে আবহাওয়ার বদল কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, সেটাই জানার চেষ্টা করেছেন।
আবহাওয়ার বিভিন্ন বিষয়গুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, বার্ষিক তাপমাত্রার ওঠানামা ইত্যাদি খতিয়ে দেখে গবেষকদের মতে হয়েছে, খামখেয়ালি আবহাওয়ায় অস্তিত্বের সংকটে পড়বে কফি চাষ।
কফি, কাজু ও অ্যাভাকাডো চাষে অনুকূল পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে কিছু ফারাক রয়েছে। যেমন অত্যধিক তাপমাত্রায় অ্যাভাকোডোর ফলন হতে পারে। কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রায় কফির ফলন হয় না। ঠিক তেমনই ঠান্ডায় অ্যাভাকাডোর চাষ হয় না। অন্যান্য অনেক ফসল শীতেই উৎপাদিত হয়।
গত কয়েক বছর ধরে তাপমাত্রার বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করে চলেছেন বিশেষজ্ঞরা। এবার জমি ও মাটির চরিত্র তার প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষণ করা হলো। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, কাজু ও অ্যাভাকাডোর ফলন বাড়তে পারে। তবে সেটা বর্তমান উৎপাদিত অঞ্চলে নয়।
এইচকে