লাগাতার শীতে মানুষের সাথে বিভিন্ন প্রাণীদেরও বেশ কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। এ সময়ে প্রাণীর নানা রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক বেশি। এ জন্যে দরকার বাড়তি যত্ন ও সচতেনতা।

কৃষি তথ্য অফিসার ও কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ সময়ে রোগ দমনের চেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হয় যেন রোগবালাই খামারে প্রবেশ করতে না পারে। যে খামারি বেশি সচেতন সে খামারি শীতে ভালো কিছু করতে পারবেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র জানায়, শীতকালে পোল্ট্রি মুরগির অপুষ্টি, রাণীক্ষেত, মাইকোপাজমোসিস, ফাউল টাইফয়েড, পেটে পানি জমা সমস্যা দেখা যায়। পাশাপাশি মুরগির অপুষ্টিজনিত সমস্যাও বেশ প্রকট হয়ে দাঁড়ায়। এসব সমস্যার সমাধানে প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন এ, সিডিইকে ও ফলিক এসিড সরবরাহ করতে হবে।

শীতের তীব্রতা বেশি হলে পোল্ট্রি শেডে অবশ্যই মোটা চটের পর্দা লাগাতে হবে। বাতাস চলাচলের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। পোল্ট্রি লিটারে অ্যামোনিয়া গ্যাস রোধে প্রতি বর্গফুট জায়গায় এক কেজি হারে অ্যামোনিল পাউডার মেশাতে হবে। শীতকালে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সপ্তাহে দুই দিন খাবারের সাথে ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি মিশিয়ে দিলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।

উপকূলীয় অঞ্চলে অনেকেই হাঁস পালন করে থাকেন। এ সময় হাঁসের নানা রোগও হয়ে থাকে। হাঁসের যেসব রোগ হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্লেগ, কলেরা ও বটুলিজম। হাঁসের প্লেগ রোগ প্রতিরোধে ১৮ থেকে ২১ দিন বয়সে প্রথম মাত্রা ও প্রথম টিকা দেওয়ার পর ৩৬-৪৩ দিন বয়সে দ্বিতীয় মাত্রা পরবর্তী ৪-৫ মাস পরপর একবার ডাক প্লেগ টিকা দিতে হবে। হাঁসের কলেরা রোগের জন্য ডাক কলেরা টিকা ৪৫-৬০ দিন বয়সে এক বার, ৬০-৭৫ দিন পর দ্বিতীয় বার ও পরবর্তী ৪-৫ মাস পরপর টিকা দিতে হবে।

গোখামারে যেন শীত ও ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খুবই সতর্ক খেয়াল রাখতে হবে। শীতকালে মোটা চটের ব্যবস্থা করা খুব জরুরি। নাহলে গরু তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে যাবে।

এসময় গাভীর যত্নে যেসব বিষয়ে নজর দিতে হবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- সঠিক সময়ে খাদ্য দেওয়া, গোসল করানো, থাকার স্থান পরিষ্কার করা, খাদ্য সরবরাহের আগে খাদ্য পাত্র পরিষ্কার করা ও নিয়মিত প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ নেয়। গাভীর খাবারের খরচ কমাতে সবচেয়ে ভালো হয় নিজেদের জমিতে গোখাদ্য চাষাবাদ করা।

একে/ওএফ