গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্ভাবিত কৃষি প্রযুক্তি দ্রুত কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) ‘গবেষণা সম্প্রসারণ সংযোগ এবং নীতি উন্নয়ন শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তাগিদ দেন। রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মশালা।

বিএআরসি ‘ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম (এনএটিপি-২) ফেইজ টু’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম।

দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা ইতোমধ্যে ফসলের অনেকগুলো উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন উল্লেখ করে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সংযোগ বাড়াতে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছেন আমাদের গবেষকরা। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোও অনেক নতুন প্রযুক্তি ও জাত নিয়ে এসেছে। এসব প্রযুক্তি ও জাত কৃষকের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া দ্রুত করতে হবে।

এসব কার্যক্রম সম্পাদনে যা করা দরকার সেগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের সকল সংস্থাকে সময়োপযোগী কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।

এনএটিপি-২ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে কর্মশালায় জানানো হয়, ফসল, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ বিষয়ে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন, প্রযুক্তি সম্প্রসারণ এবং সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে মান ও বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষকদের বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা এবং আয় বৃদ্ধি করে সর্বোপরি কৃষকদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা।

বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ারের সভাপতিত্বে এনএটিপি’র প্রকল্প পরিচালক মো. মতিউর রহমান, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. জীবনকৃঞ্চ বিশ্বাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান, বিএআরসি’র পরিচালক ড. মো. হারুনুর রশীদ প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আক্কাস আলী।

প্রসঙ্গত, এনএটিপি-১ সফলভাবে বাস্তবায়িত হওয়ায় বিশ্ব ব্যাংক প্রকল্পটিকে ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। প্রকল্পটির ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ সরকারকে পুনরায় অর্থ সহযোগিতা দিয়েছে। ফলে কৃষি মন্ত্রণালয় (লিড এজেন্সি) এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় এনএটিপি-২ প্রকল্পটির দ্বিতীয় ফেজের কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে। এটি ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে এবং চলবে ২০২১ সাল পর্যন্ত।

প্রকল্পের গবেষণা অংশের আওতায় ১৯০টি ‘প্রতিযোগিতামূলক গবেষণা অনুদান (সিআরজি) গবেষণা উপপ্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্যর্পূণ ৬৯টি হস্তান্তরযোগ্য ও উন্নত প্রযুক্তি (শস্য-৪৮, প্রাণিসম্পদ-১০, মৎস্য-১১টি) উদ্ভাবিত হয়। ইতোমধ্যে ১১টি উদ্ভাবিত প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কৃষি সম্পসারণ, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কাছে দেয়া হয়েছে।

একে/টিএম